কিংবদন্তী অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুর খবরে ঢাকার শোবিজ পাড়ায় শোক নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে শোবিজ তারকাদের অনেকেই শোকবার্তা জানিয়েছেন।
চিত্রনায়ক শাকিব খান বলেন, “ফারুক ভাই একজন কিংবদন্তী অভিনেতা ছিলেন। ফারুক ভাইকে হারিয়ে পুরো চলচ্চিত্র জগৎ একজন বড় অভিভাবক হারিয়েছে। ফারুক ভাই শুধু আমাকে নয় সবাইকে খুব ভালোবাসতেন।”
এসময় শাকিব খান পুরো দেশবাসির কাছে ফারুক এবং তার পরিবারের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
চলচ্চিত্র প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, “নেতৃত্ব শূন্য চলচ্চিত্রশিল্পে হাল ধরেছিলেন ফারুক ভাই। তার নেতৃত্বে চলচ্চিত্রের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আধুনিক চলচ্চিত্রের জন্য সার্ভার ব্যবস্থা, প্রজেক্টরসহ হলের সংস্কারসহ বিভিন্ন হল পুনর্নির্মাণ তার হাত ধরেই এসেছে। ফারুক ভাই শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, তিনি একজন ভালো মনের মানুষও ছিলেন। তার মধ্যে নেতৃত্বের যথেষ্ট গুনাবলি ছিল। তার বিদায়ে চলচ্চিত্র অঙ্গন নেতৃত্বশূন্য হয়ে গেল।”
মিশা সওদগার বলেন, “নায়ক ফারুক একজন বড় মনের মানুষ ছিলেন। শুধু চলচ্চিত্র অঙ্গন নয় পুরো দেশ একজন ভালো নেতাকে হারিয়েছে। তার অভাব পূরণ হওয়ার মতো না। উনি সর্বদা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করতে চেয়েছেন।”
মিশা সওদগার আরও বলেন, “নায়ক ফারুক সত্যের জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিতে পারেন। উনার নেতৃত্বেই এরশাদের সময়ে যে কর আরোপ হয়েছিল তা বন্ধ হয়েছিল।”
অভিনেতা নাঈম বলেন, “আমি ফারুক ভাইয়ের অনেক বড় ভক্ত। ফারুক ভাই দীর্ঘদিন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আল্লাহর কাছে এই দোয়া করব, যাতে ফারুক ভাইয়ের জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহ, ফারুক ভাইকে বেহেস্ত নসিব করুক। ফারুক ভাইয়ের বিদায়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়।”
চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, “কিছুদিন আগে ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি বললেন ‘শিগগিরই সুস্থ হয়ে ফিরে আসছি’। খুব আশায় ছিলাম ফারুক ভাই ফিরে আসবেন। কিন্তু এভাবে ফিরে আসবেন সেটা কখনো ভাবিনি।”
ফেরদৌস আরও বলেন, “ফারুক ভাই তার অভিনয় ও কাজ দিয়ে চিরকাল আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। যতদিন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র থাকবে, বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকবে, ততদিন ফারুক ভাই আমাদের হৃদয়ে, আমাদের অন্তরে থাকবেন।”
চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, “মিয়া ভাইয়ের মতো মানুষেরা কখনো চলে যায় না, তারা আমাদের হৃদয়ে আজীবন থাকবেন। ফারুক ভাই সবসময় বলতেন তিনি ভালোবাসার জগতের মানুষ। তিনি সবসময় আমাদের খুব স্নেহ করতেন, শাসন করতেন। যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে, বাংলা চলচ্চিত্র থাকবে, যতদিন আমরা থাকব, ততদিন মিয়া ভাইকে আমরা স্মরণ করব। তার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার অসাধারণ গুনাবলি ছিল। চলচ্চিত্রের স্বার্থে ফারুক ভাই সবসময় কাজ করে গেছেন।”
অভিনেতা ড্যানি সিডাক বলেন, “ফারুক ভাই সবসময় আমাদের খোঁজখবর নিতেন। চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেই অভাব আমরা খুব ভালোভাবেই পাব। পর্দার ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে বাস্তবের ফারুক ভাইয়ের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।”
দুই বছর ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফারুক। সোমবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ৭টা ৪০মিনিটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়।