ভারতীয় অস্কারজয়ী সুরকার ও সংগীতশিল্পী এ আর রাহমানের দীর্ঘ ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে। তিক্ত সম্পর্কের জেরেই নাকি অস্কার প্রাপ্ত সুরকারের স্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই খবর ভারতী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তার স্ত্রী সায়রা বানুর আইনজীবী। পাল্টা পোস্ট করেন রহমান নিজেও । হঠাৎ এমন খবরে হতবাক বিনোদন দুনিয়া।
এদিকে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন সন্তানরা। রহমান ও সায়রা তিন সন্তানের বাবা-মা। দুই মেয়ে খাতিজা, রহিমা ও ছেলে আমিন রয়েছে তাদের ঘরে। খাতিজা এখন বিবাহিত। রহিমা ও আমিন অবিবাহিত।
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট ভাগ করে রহিমা সকলের কাছে তাদের জন্য প্রার্থনা করার অনুরোধ জানান। একটি সংক্ষিপ্ত পোস্টে রহিমা লেখেন, ‘এটা তাদের ব্যক্তিগত জীবন। সেখানে আমরা উপদেশ দেওয়ার কেউ নই। তারা জানেন তারা কী করছেন এবং তার পরিণাম নিয়েও অবগত। তাদের তেমনই থাকতে দেওয়া হোক।’
রহমানের ছেলেকে যে কোনও অনুষ্ঠানে বাবার সঙ্গেই দেখা যায় তাকে। তিনিও বাবার মতোই সুরকার। পরিবার এই মুহূর্তে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাই রহমান নিজেও এই সময় তাদের ব্যক্তিগত পরিসর অক্ষুন্ন রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সুর ছেলে আমিনের কণ্ঠে।
তিনি বলেন, ‘সকলকে অনুরোধ করব এমন একটা সময় আমাদের বিরক্ত করবেন না।’
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে সংসার শুরু করেন এ আর রাহমান। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শিল্পী জানিয়েছিলেন, সায়রা বানুর সঙ্গে বিয়েটা হয়েছিল পারিবারিক পছন্দে। তার ব্যক্তিগত পছন্দ বা প্রেম নয়। মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে রাহমান এমনও বলেছিলেন, স্ত্রী সায়রার সঙ্গে তার কিছু সাংস্কৃতিক মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও তারা বিষয়টি সামলে নিয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন।
রাহমান দম্পতিকে সর্বশেষ আম্বানি পরিবারের অনুষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা গেছে।
এ আর রাহমান ১১ বছর বয়স থেকে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার বিভিন্ন সুরকারের সঙ্গে বাজাতে শুরু করেন। ঘটনাচক্রে ব্যক্তিজীবনে ধর্ম বদলান। ২৩ বছর বয়সে সপরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। তাঁর নাম ছিল দিলীপ কুমার। ১৯৯২ সালে তামিল ছবি ‘রোজা’ দিয়ে সুরকার হিসেবে তাঁর যাত্রা। পরে ১৯৯৫ সালে রাম গোপাল ভার্মার ‘রঙ্গীলা’তে সংগীত পরিচালনা করে তিনি শুরু করেন বলিউড যাত্রা ।
কিংবদন্তি এই সংগীত শিল্পী তার সংগীতের জীবনে ড্যানি বয়েলের ২০০৮ সালের চলচ্চিত্র ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’–এর জন্য অস্কার, গ্র্যামি, বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব জিতেছিলেন। তিনি ৬টি ভারতীয় জাতীয় পুরস্কার ও ৩২টির বেশি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন।