ভাইরাল স্ক্রিনশট নিয়ে যা বললেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
ভাইরাল স্ক্রিনশট নিয়ে যা বললেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি : সংগৃহীত

উপদেষ্টা হওয়ার পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বিভিন্ন সময়ের অবস্থান ও চলচ্চিত্র নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। শাপলা চত্বর–বিষয়ক একটা স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কার্ড ও ‌‌স্ক্রিনশটে দাবি করা হচ্ছে, ফারুকী ২০১৩ সালে বলেছেন—‘শাপলা চত্বর জঞ্জালমুক্ত হয়েছে’। আদৌ কি এমন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি? 

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তাকে নিয়ে ফেসবুকে ঘুরতে থাকা এসব কার্ড ও ‌স্ক্রিনশট নিয়ে জবাব দেন। তিনি নেটিজনদের প্রতি অনুরোধ করেছেন, কিছু বিশ্বাস করার আগে সবাই যেন যাচাই করে নেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১১টা ৫ মিনিটে দেওয়া স্ট্যাটাসের শুরুতেই ফারুকী লিখেছেন, মানুষ ও ফিল্মমেকার হিসেবে তিনি মধ্যপন্থার। 

তার ভাষ্যে, “জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে একে অপরের পাশাপাশি থাকা এবং কোনো ধর্মীয় বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় কটাক্ষ ও হাঙ্গামায় না জড়ানোর জন্য একটা লেখা লিখে বহুবিধ ট্যাগও খেয়েছি। আমাদের আজিজ মার্কেটে দীপন খুনের পর লিখছিলাম।”

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটকে ‍ ‘ফেইক’ উল্লেখ করে ফারুকী লিখেছেন, ‘এগুলো মিথ্যা। শাপলা চত্বরের ঘটনার পরে আমি বরং লিখেছি, মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্রদের মৃত্যুতে আমি ঘুমাতে পারছি না! ইংরেজিতে লেখা পোস্টটা আগ্রহীরা দেখে আসতে পারেন।’

আপন দুই ভাই মাদ্রাসায় পড়েছে উল্লেখ করে ফারুকী প্রশ্ন ছোড়েন, “আমি সাধারণ মাদ্রাসাছাত্রদের মৃত্যুতে উল্লাস করব? মাদ্রাসার ছাত্র কেন, কোনো মানুষের মৃত্যুতে আমি উল্লাস করব?” আক্ষেপ নিয়ে আরও লিখেছেন, “আমি তো এমনকি অপরাধীর মৃত্যুতেও শোক করি। মিথ্যা কথা ছড়ানোরও তো একটা মাত্রা থাকে।”

ফারুকী তার স্ট্যাটাসে জানান, তারই প্রযোজনায় তার ছোট ভাই কিবরিয়া পরিচালনা করেছিলেন ‘আব্দুল্লাহ’ নামের চলচ্চিত্র, যেখানে দেখানো হয়েছে কেবল মাদ্রাসায় পড়ার কারণে একটা ছেলেকে সমাজে কী রকম তাচ্ছিল করা হয়।

সবশেষে ফারুকী লিখেছেন, “আমরা আমাদের কাজটা এনজয় করছি। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুটা করতে পারব, যার ভেতর দিয়ে প্রাথমিকভাবে আট বিভাগীয় শহরে একটা নবতরঙ্গ শুরু করতে পারব। পারব জুলাই ন্যারেটিভ নির্মাণ করতে, ১৫ বছরের দুঃশাসনের এক্সরে রিপোর্ট তৈরি করতে।”

এর আগে গত সোমবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নানা বিষয়ে কথা বলেন। সেদিন ফারুকী বলেন, উপদেষ্টার দায়িত্বটা তখনই নিতে রাজি হয়েছেন, যখন মনে করেছেন যে তিনি কাজটা হয়তো করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ফ্যাসিস্টবিরোধী কি না, তার পুরস্কার হিসেবে আমার কাজ প্রয়োজন নেই। আমি ফ্যাসিস্টদের বিরোধিতা করেছি আমার বিবেকের কারণে। নিশ্চয়ই এই পদের জন্য নয়। আপনি নিশ্চয়ই বিশ্বাস করবেন, আমি মারা গেলে মন্ত্রী হিসেবে কেউ আমাকে মনে রাখবে না, মনে রাখবে ফিল্মমেকার (চলচ্চিত্র নির্মাতা) হিসেবে।’ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত—সবাই গালি দেয় মন্তব্য করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আপনাকে আপনার কমনসেন্স অ্যাপ্লাই (সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ) করতে হবে। একটা লোককে একই সঙ্গে চার পার্টি কেন গালি দেবে। চার পার্টি মনে করছে, সে কারও লোক নয়। কারণ, আমি কারও লোক নই। আমি আমার লোক। আমি যেটাকে যে মুহূর্তে ঠিক মনে করি, ওই মুহূর্তে ওই কথা বলি। আমার কারও প্রতি কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নেই। কখনো ছিল না, কোনোকালে থাকবেও না। কারণ, আমি শিল্পী। আমার কোনো দল নেই।’

১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেদিন শপথ অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ফারুকী বলেছিলেন, “আমি কখনোই কোনো পদ কিংবা কোনো চেয়ারে বসব, এটা ভাবিনি। কিন্তু প্রফেসর ইউনূসের সহকর্মী হওয়াটা টেম্পটিং (লোভনীয়), না বলাটা মুশকিল।”

Link copied!