সম্প্রতি বাংলাদেশের সিনেমা ও নাটকের তারকাদের বিদেশ ভ্রমণ কিংবা বিদেশে স্থায়ী হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। দেখা গেছে, তারকাখ্যাতি পেলেই অনেকেই নিজেদের আবাস গড়ে তুলতে ব্যস্ত হচ্ছেন ইউরোপ-আমেরিকায়। ঢালিউড কিং শাকিব খান তাদের মধ্যে আলোচিত নাম। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পেয়েছেন।
এদিকে অভিনয়কে একরকম বিদায় জানিয়ে তারকাদের বিদেশে স্থায়ী হওয়ার তালিকা বেশ লম্বা। দুই দশক আগেও সিনেমায় শাবানার অবস্থান ছিল বেশ উজ্জ্বল। সেসময় হুট করে স্বামীর সঙ্গে সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। অন্যদিকে এক দশকের বেশি হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া আছেন শাবনূর। তুমুল জনপ্রিয় এই নায়িকা শাবানার মতোই হঠাৎ উধাও হয়ে যান। এরপর জানা যায়, বিয়ে করে শাবনূর থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়।
এদিকে নাটকের জগতে একসময়ের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন টনি ডায়েস। এই অভিনেতা হঠাৎ অভিনয় ছেড়ে বেছে নেন যুক্তরাষ্ট্রের জীবন। তার পথ ধরে হাঁটেন জনপ্রিয় তারকা জুটি বিপাশা-তৌকির, জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী, লাস্যময়ী অভিনেত্রী মোনালিসা, ঢালিউড নায়ক মারুফ। এছাড়াও তারকা দম্পতি হিল্লোল-নওশীন পাড়ি জমিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। এই তালিকায় নাম এসে যাবে জনপ্রিয় অনেক তারকার।
এই যখন অবস্থা, তখন তারকাদের এমন দেশ ছেড়ে বিদেশ চলে যাওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে কথা বলেন বাংলা চলচ্চিত্রের একসময়ের পর্দা কাঁপানো নায়ক, বর্তমানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তারকাদের দেশ ছেড়ে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘‘আমারও যে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাব আসেনি, সুযোগ আসেনি, তা নয়। আমি দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি, কাজ নিয়ে আছি। আমি বিদেশে চলে গেলে তো আমার এই কাজ করতে পারতাম না। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন যদি নাও করতাম, তারপরও বিদেশ যেতাম কিনা সন্দেহ আছে।”
ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, ‘‘আমি এদেশে জন্মেছি। আমার মৃত্যু ও কবর এখানেই হবে। এখন কেউ হয়তো এটা ভাবে না। সেই দেশে (আমেরিকা-ইউরোপ) টাকা থাকলে তো আবার আনন্দ-ফুর্তিও করা যায়।”
বিদেশে না-যাওয়ার যুক্তি তুলে ধরে এই অভিনেতা বলেন, “আমি তো মৌলবি ঘরানার মানুষ। রাস্তায় বা গাড়িতে চলতে গিয়ে আজানের শব্দ শুনি। কোন দেশে গেলে আমি এমন আজানের শব্দ শুনতে পাবো? আমি আমার স্ত্রীর কবরে গিয়ে দোয়া করি। বিদেশ গেলে তো, তা করতে পারবো না।”