জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন দেশে ফিরেছেন। রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেনে এই গায়িকা। বিমানবন্দরে স্লোগানে স্লোগানে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির একদল কর্মী। এসময় অনেকেই তাকে অনেকই ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে জানাতে এগিয়ে যান, তবে তাদের কারও হাত থেকেই ফুলের তোড়া গ্রহণ করেননি বেবী নাজনীন। জানিয়েছেন, ফুল নয়, কেবল শুভেচ্ছাই যথেষ্ট। তাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমি রাজনীতির সঙ্গেই আছি, মিডিয়াকর্মী হিসেবে আছি।’
বিমান বন্দরে সংবাদমাধ্যম ও বিএনপির কর্মীরা ঘিরে ধরলে তাদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বেবী নাজনীন। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাংলাদেশে শহিদ ছাত্রজনতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আহত ভােইবোনদের প্রতি সমবেদনা। তাদের আত্মত্যাগে নতুন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। পতন হয়েছে বাংলাদেশের বুকে জেঁকে বসা জগদ্দল পাথর শেখ হাসিনা সরকারের। দীর্ঘ ১৬ বছর পর বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছে বাংলাদেশের মানুষ, কথা বলতে পারছে স্বাধীনভাবে।’
জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী আরো বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বৈরাচারের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে ছাত্রজনতা, তাদের সেই স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সাবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসুরী তারেক রহমানের নেতৃত্বে সবাইকে কাজ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুসের মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তি রয়েছেন, এতে আমরা আশাবাদী হতেই পারি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন দিয়ে একটি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।”
বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসনামলে নিজের পেশাগত কাজকর্মে বার বার বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয় বেবী নাজনীনের সংগীত জীবন। বাংলাদেশ বেতার-টিভি-মঞ্চ কোনো মাধ্যমেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি। একপর্যায়ে দেশ ছাড়তেই বাধ্য হন বেবী নাজনীন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তিনি সবসময়ই সমাদৃত। ফলে বিদেশের মাটিতে তার কাজকর্মে কোনো বাধা আসেনি। বরং এই সময়ে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে গান করে গেছেন বেবী নাজনীন।
সাড়ে চার দশকের ক্যারিয়ারে আধুনিক সংগীতের অর্ধ শতাধিক একক অডিও অ্যালবামসহ অসংখ্য দ্বৈত অডিও অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি। ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আশা ভোঁশলে, বাপ্পি লাহিড়ী, কুমার শানু, কবিতা কৃষ্ণামূর্তির সঙ্গেও একাধিক অডিও অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন চলচ্চিত্র, অডিও মাধ্যমে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।
মানুষ নিষ্পাপ পৃথিবীতে আসে, আমার একটা মানুষ আছে, ওই রংধনু থেকে, পত্রমিতা, এলোমলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল, কাল সারা রাত ছিল স্বপনেরও রাত, দু’চোখে ঘুম আসে না, আমার ঘুম ভাঙাইয়া গেল রে মরার কোকিলে, লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ উঠেছে, আজ পাশা খেলবো রে শাম, প্রিয়তমা, সারা বাংলায় খুঁজি তোমারে ও বন্ধু তুমি কই কই রে.. এ প্রাণো বুঝি যায় রে- এমন অসংখ্য গানের মাধ্যমে বাংলা গানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছেন এই সংগীতশিল্পী।