সময়টা ষাটের দশকের শেষ। সিনেমায় সাদা-কালো যুগ। রুপালি পর্দার নায়ক-নায়িকা জনসাধারণের কাছে আক্ষরিক অর্থেই দূর আকাশের তারা। উত্তম কুমার হলে তো কথাই নেই। সেই তিনিই লিভ টুগেদারে! প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী বর্তমান থাকতেই তিনি সুপ্রিয়া দেবীর ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে উঠে এসেছিলেন। বাঙালি কোনো প্রশ্ন তোলেনি। সেই প্রসঙ্গ মনে পড়িয়ে দিয়ে পরিচালক-অভিনেতা অঞ্জন দত্তর দাবি, “তখন লিভ টুগেদার বিষয়টা কেউ জানতই না। অথচ তাদের নিয়ে সেই অর্থে কোনো গসিপ ছিল না। অনুরাগীরা তাদের নিজের মতো করে জীবন কাটানোর স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আমায় মনে হয়, তখনকার বাঙালি অনেক বেশি আধুনিক ছিল।”
হঠাৎ কেন এই প্রসঙ্গের অবতারণা? সমাজমাধ্যম নিয়ে ইদানীং বিশিষ্টদের অভিযোগ অজস্র। তাদের দাবি, সমাজমাধ্যম আসার পর থেকে যেন মানবিকতার অবনমন ঘটেছে। অনুসরণকারীরা সারা ক্ষণ ‘তারকা’দের ব্যক্তিজীবন, পেশাজীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া চালাচ্ছেন। বিশেষ করে বিনোদন দুনিয়ার মানুষদের অন্দরমহল নিয়ে যেন বেশি মাথাব্যথা। ফলে, ‘ব্যক্তিগত’ বলে কিছুই থাকছে না।
অঞ্জন দত্তের ক্ষোভ, “মহানায়ক-সুপ্রিয়া দেবী মঙ্গল গ্রহের বাসিন্দা ছিলেন না। সেই সময়ের বাঙালিও না। অথচ তারা নিজেদের মতো জীবনযাপনের স্বাধীনতা পেয়েছিলেন। সমাজও তাদের সেই ছাড়পত্র দিয়েছিল। একুশ শতক যা দিতে পারছে না। সত্যিই বিষয়টি হতাশার।”