প্রায় দেড় হাজার গানের স্রষ্টা আবদুল করিম ১৯১৬ সালে সিলেটে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকসহ অসংখ্য পদকে ভূষিত হয়েছেন।
তাঁর গান বাংলাদেশের লোকসংগীতের আঙিনা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে দেশের বাইরেও। আজ এই গুণী সাধকের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী।
নাটক, চলচ্চিত্র এবং হালের জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পীদের কণ্ঠে তাঁর গান পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা।
কিশোর বয়স থেকেই গানের চর্চা শুরু হলেও, বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে শাহ আব্দুল করিমের গানের বিস্তার ঘটে মূলত গত শতকের শেষ দিকে।
শাহ আব্দুল করিম বেড়ে ওঠেন সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায়। শুরুর দিকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় মালজোড়া গান গাইতেন।
আর দেশব্যাপী পরিচিতি পান সিলেটের এই বাউলশিল্পী। তবে তিনি নিজে তার গান প্রথম গান ১৯৯৪ সালে। তাঁর রূপসাগর অ্যালবামে “কুঞ্জ সাজাও গো আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে” এই গানটি তার গলায় শাহ আব্দুল করিমের প্রথম গান।
এরপর ব্যাপক সাড়া মেলে বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে ওঠা আব্দুল করিমের গানে ভাটি অঞ্চলের মানুষের সুখ-দুঃখ প্রেম-ভালোবাসার সঙ্গে সঙ্গে দেহতত্ত্ব ও অসাম্প্রদায়িকতার কথা উঠে আসে।
‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে’, ‘গাড়ি চলে না’, ‘কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া’, ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইছ’, তার এরকম অসংখ্য গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার গান বেছে নিয়েছে জনপ্রিয় অনেক ব্যান্ডের শিল্পীরাও।
তার লেখা গান ইংরেজি ভাষাতেও অনূদিত হয়েছে। বেশ কিছু গানের বইও প্রকাশিত হয়েছে।
দারিদ্র্যের কারণে প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারেননি। স্কুলে গিয়েছিলেন কয়েক দিন মাত্র। পরিবেশ ও সমাজ থেকেই শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠেছেন। তবে গানের দীক্ষা নিয়েছেন পূর্ববর্তী বাউল গুরুদের কাছে।
তাঁর গানা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে তা পৌঁছে গেছে আরও দূরে।
২০০৯ সালের মারা যান শাহ আব্দুল করিম।