চোখের আলো নেই তো কিছু হয়েছে, মনের আলো তো আছে। সেই আলোতেই তারা নিজেদের নিপুণ দক্ষতা দেখিয়ে যাচ্ছেন। সৃজনশীলতার শৈল্পিকতায় আলোকিত করছেন পৃথিবী। জগতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছে না বলেই তারা নিজেদের সুরের সুধা অন্যকে পান করাতে কার্পণ্য করেননি। তাদের সুরের মূর্ছনায় বিমোহিত অগণিত শ্রোতারা।
আর এসব সৃজনশীলতার মধ্য দিয়েই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা প্রমাণ করল দৃষ্টিহীনতা মানেই প্রজ্ঞাহীনতা নয়।
দেশাত্মবোধক, লালন, আধুনিক ও চলচ্চিত্রের গানসহ বিভিন্ন ধরনের গান গেয়ে নিজেদের অসামান্য প্রতিভার জানান দিয়েছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
এমন দৃশ্যকল্পই চিত্রিত ছিল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভার সাংস্কৃতিক পর্বে। সংগঠনটির জাতীয় সাধারণ পরিষদের সদস্যদের উদ্যোগে রাজধানীর বকশীবাজারস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।
সংস্থার চেয়ারম্যান নুরুল আলম সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বার্ষিক সাধারণ সভার সঞ্চালনায় ছিলেন মহাসচিব আইউব আলী হাওলাদার। সভায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়-ব্যয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে ঢাকা মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ৩০০ জন অসহায়, হতদরিদ্র, সুবিধা-বঞ্চিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মাঝে চিকিৎসা সেবা, আর্থিক সাহায্য, বয়স্ক ভাতা, বিবাহ সাহায্য, ক্ষুদ্র ব্যবস্থা সাহায্য, পুনর্বাসনের জন্য সেলাই মেশিন, উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষাবৃত্তিসহ বিভিন্ন অনুদান প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চকবাজার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাজি মো. আনোয়ার পারভেজ বাদল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোকলেচুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মাধব চন্দ্র সরকার, যুগ্ম মহাসচিব এস এস ইউনুসুর রহমান, সহকারী মহাসচিব মো. মনিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সচিব আবু আলেম মাতবর, মহিলাবিষয়ক সচিব সাফিয়া বেগম, মোসা. নারগিস ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য গফফার হোসেন, মো. রিপন, মো. আলী, মিলন আক্তার, মাসুদ আনোয়ার খান, মো. আনোয়ার দেওয়ান, জরিনা খাতুন, মো. মোকলেসুর রহমান, আব্দুল মালেক তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে ৪টি দাবি জানান সংস্থার মহাসচিব আইউব আলী হাওলাদার।
দাবিগুলো হলো,
১. সংস্থার প্রধান কার্যালয় ৬, অরফানেজ রোড, বকশিবাজারের বাড়িটি বিনামূল্যে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ প্রদান করা।
২. প্রতিবন্ধি ভাতা বৃদ্ধি করা।
৩. যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ৪.অসহায়, হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ভিক্ষাবৃত্তির কবল থেকে মুক্ত করে তাদের ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন যে কাউকে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া।