আজ ৬ এপ্রিল,মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মদিন। ১৯৩১ সালের এই দিনে বর্তমান বাংলাদেশের পাবনায় তার জন্ম। সুচিত্রা সেন নামে বিখ্যাত হলেও তার পৈত্রিক নাম রমা সেনগুপ্ত। তার বাবা করুণাময় সেনগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর মা ইন্দিরা দেবী গৃহবধূ। রমা ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই তিনি পড়াশোনা করেন। প্রখ্যাত কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী তিনি।
১৯৭৮ সালে রুপালি পর্দা থেকে বিদায় নেন তিনি। চলে যান একেবারে লোকচক্ষুর আড়ালে। কিন্তু তার প্রভাব বাঙালির কাছে নিঃশেষ হবে না কোনো দিন। কত নায়িকা এলো গেল, কিন্তু সুচিত্রা সেন একজনই। বাঙালি নারীর প্রতিচ্ছবি মানে তিনি। চলচ্চিত্র তারকাদের অধিকাংশের সচরাচর যাপিত স্খলিত জীবনের বাইরে শালীনতায় মোড়া সুচিত্রা সেন যেন এক হৃদয় ঈশ্বরী। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে তিনি সবার প্রিয়।
বাঙালি পারফেক্ট জুটি বলতে এখনো বোঝে সেই উত্তম-সুচিত্রাকেই। বহমান এমন ভালোবাসার উৎস লাগে রহস্যময়। এই রহস্যময়তাই কি সুচিত্রাকে অনন্যা রাখে?
সুচিত্র সেন শুধু বাংলা জনপদ জয়ী ছিলেন না। তিনি প্রথম ভারতীয় অভিনয় শিল্পী, যিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি। এখন বিশ্বসভায় গুরুত্ব পেতে থাকা বাংলা ছবির প্রথম মশালধারী ছিলেন সুচিত্রা সেন।
সব মিলিয়ে সুচিত্রা সেন ৬৮টি ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার। শত শত ছবিতে দশকের পর দশক কাজ করে অনেকে যা পান না তিনি অর্জন করেছেন কীর্তিগুণে সে খেতাব ‘মহানায়িকা’।
তুমুল সাফল্যের সিনে জীবনের ২৫ বছর পর ১৯৭৮ সালে হঠাৎ অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে তিনি ব্রতী হন রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায়। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহানায়িকা।