প্রায়ই মেজাজ হারান চিত্রনায়িকা পরীমনি। এবার মেহনাজ খান নামে এক নারী সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপে গিয়ে মারার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছেন এই চিত্রনায়িকা। সেই অডিও ফাঁস করে দিয়েছেন ঐ নারী সাংবাদিক। অডিওতে শোনা যায়, রেগে আগুন হয়ে উঠেছেন পরী। একের পর এক গালি দেওয়ার পাশাপাশি সেই নারী সাংবাদিককে দেখে নেওয়ারও হুমকি দিচ্ছেন।
পরীমনির এরকম আচরণের কারণ কী জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে মেহনাজ বলেন, ‘একটি অনলাইনের নিউজের থামনেইলে পরী ও তার ছেলের ছবি শেয়ার করে আমি ক্যাপশনে লিখেছিলাম, “আর কি? এমন মানুষকে বিশ্বাস করা যার মাশুল বাচ্চারও দিতে হয়!’
সাংবাদিক মেহনাজের দাবি, তিনি একজন সিংগেল মাদার। তার ডিভোর্স হয়েছে ৫ বছর আগে। এ কারণে নিজের বাচ্চাকে উদ্দেশ্য করে এই পোস্ট দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এরপরই সেই নিউজ পরীমনির চোখে পড়ার পরে ঘটে এই ঘটনা।
নায়িকা পরীমনি ভাবে তার ছেলে রাজ্যকে নিয়ে এই পোস্ট দেওয়া হয়েছে। আকারণে সাংবাদিক মেহনাজকে ফোন দিয়ে গালি দেন বলে অভিযোগ তার। শুধু তাই নয়, গাড়ি নিয়ে নাকি মেহনাজের অফিসের নিচেও যান পরী। এরপর একজন বিনোদন সাংবাদিক তাকে বুঝিয়ে সেই মুহূর্তে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এছাড়া মেহনাজ খান এক দীর্ঘ পোস্টে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দেশের প্রথম সারির নায়িকা পরীমনি কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে অকথ্যভাবে গালাগালি করেন। আমাকে হুমকি দেন। আমার অফিসে এসে আমাকে মারবে, আমাকে নাকি দেখে নিবে, আমার নাকি চাকরি খেয়ে দিবে বলে হুমকি দেন।’
একটা স্ট্যাটাসকে ঘিরে উনি এই কাণ্ড ঘটালেন বলে লেখেন মেহনাজ। শুধু আমার ক্যাপশনে পরীমনি ও তার ছেলের ছবি থাকায় ঐ চিত্রনায়িকা এরকম অপ্রত্যাশিত কাহিনি ঘটান।
সাংবাদিক মেহনাজ লেখেন, ‘আমি জানতে চাই আমার ভুলটা কোথায়? শুধু দাড়ি কমার জন্য একজন নায়িকা এমন আচরণ করবে? আমি কোনো নিউজও করিনি পরীমনির বিরুদ্ধে। মাত্র আমার পার্সোনাল প্রোফাইলের একটা ক্যাপশনকে ঘিরে তার কেন মনে হলো যে তাকে নিয়ে লিখেছি। আর আমি তো খারাপ কিছু বলিওনি তার সন্তান নিয়ে। আমি জানি সিংগেল মাদারের লাইফ কত কঠিন হয়।’
এই নার সাংবাদিক তার পোস্টে আরও লেখেন, ‘পরীর জন্য আমার খুব সহানুভূতি ছিল। কিন্তু তারকারা মনে হয় দূর থেকেই সুন্দর। বিনা কারণে রাত ১২টা পর্যন্ত আমাকে যে হেনস্তা করলো এবং আমাকে যে মারার হুমকি দিয়েছে। এজন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতে বাধ্য হলাম এবং আমার ও আমার পরিবারের যদি কিছু হয় এর দায়ী হবে পরীমনি।’
তিনি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অভিনেত্রী পরীমনি আসলে মাহান এটলিস্ট আমাদের বিনোদন সাংবাদিকদের চেয়ে। যদিও আমাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারণ আমি গালি খেয়ে চুপ কেন থাকি নাই। এখন পর্যন্ত যার সাথে সব। ইক্টু মানে। বিন্দু মাত্র আওয়াজ নেই এবং আমাকে বলাও হয়েছে মিমাংসার বিষয়..... আমরা দুজন ‘মা’ আমাদের সন্তান এইতো। উনি যা করেছে উনি ভুলেও নাকি গেয়েছিল। এখন আমি কাকে কি বলবো?
খুবই অদ্ভুত একটি বিষয়! আমাকে ভুল প্রমাণ এবং আমি নাকি এ বিষয় ভাইরাল হওয়ার জন্য করেছি। আপনাদের মা বোন হলেও এমনই বলতেন? আমাকে বোন বোন বলে সাংবাদিক ভাইগুলো লাইভ করছে। আবার যা ইচ্ছে তাই করছে ও বলছে! মানে আমি বুঝে নিলাম যেসব সিনিয়ররা আমার চাকরি বাচানোর জন্য এতো চেষ্টা করেছে তারা আসলে সারাদিন অফিস বাদ দিয়ে এতো কষ্ট কেন করলো? এর জন্য গালাগালি শুনতে হয়। সমস্যা নেই। পরের স্ট্যাটাসে আসছে নিউজ।’
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক তার ফেসবুকে পরীমনির সঙ্গে কথা বলার সেই অডিও প্রকাশ করে সবশেষ লিখেছেন, ‘যারা বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার না এবং আমার ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য ডাকছেন এবং ফুল কনভারসেশন জানতে চাচ্ছেন। শুনে দেখুন। আমি কোন বাজে কথা বলেছি নাকি?
এছাড়া প্রশ্ন আসবে- কেন আমি অভিনেত্রী পরীমনিকে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। বলে শেষ করতে পারতাম। উনি যেমন তার সন্তান নিয়ে প্রশ্ন করে যাচ্ছে, আমিও তেমন আমার ইন্টেনশন সম্পর্কে বুঝিয়ে যাচ্ছিলাম। একটা উদ্যেশ্য তখনও ছিল, এখনো। পরীর বেবিকে মিন করে বলিনি। মানে বলিনি। আমি মরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বলে যাবো। আমার লেখায় ভুল ছিল, সেই জন্য এভাবে আমাকে একজন নারী হয়ে যে ভাবে কথা বলেছেন। আমি কখনোই মানতে পারবো না।’