দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী এ আর রহমান। স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে হঠাৎ এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গায়কের ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বিয়ের ২৯ বছর পর তারকা স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সায়রা বানু। সম্পর্কের মধ্যে মানসিক চাপ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকার পরও নিজেদের মধ্যে অনেক জটিলতা ও অপ্রতিরোধ্য ব্যবধান খুঁজে পেয়েছেন। যা কোনো পক্ষই পূরণ করতে সক্ষম নয় বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে, জনপ্রিয় এ গায়কের বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তার একটি পুরনো সাক্ষাৎকার ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ ও সম্পর্ক হয়ে উঠার বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
ভারতীয় সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চেন্নাইয়ের একটি সুফি মাজারে সায়রার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার কথা এবং বিয়েতে স্ত্রীর বোন ও তার মায়ের ভূমিকা কী ছিল―এসব জানিয়েছেন এ আর রহমান।
ভারতীয় টেলিভিশন প্রযোজক, পরিচালক ও লেখিকা নাসরিন কবির মুন্নির লেখা ‘এ আর রহমান: দ্য স্পিরিট অব মিউজিক’ বইয়ে সায়রার সঙ্গে অস্কারজয়ী গায়কের সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে। এতে সোজাসাপটা কথা বলেছেন এ আর রহমান। এ গায়ক জানিয়েছেন, অল্প বয়স থেকেই কখনো কোনো নারীর প্রতি চোখ রাখেননি।
সংগীত পরিচালক এ আর রহমান বলেন, ১৯৯৪ সাল যখন আমার বয়স প্রায় সাতাশ, তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এখনই আমার বিয়ের উপযুক্ত সময়। এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে, ওই সময়ই আমি অনুভব করেছিলাম যে আমি বৃদ্ধ হওয়া শুরু করছি। স্বভাবতই ভীষণ লাজুক ছিলাম আমি এবং কখনো মেয়েদের সঙ্গে সেভাবে কথা বলিনি।
এ আর রাহমান বলেন, ‘ক্যারিয়ারে অনেক তরুণী গায়িকাদের সঙ্গে দেখা করেছি। আমার স্টুডিওতে যখন একসঙ্গে কাজ করতাম, তখনও কারও দিকে তাকাতাম না এই ভেবে যে, পরবর্তীতে হয়তো একদিন আমার কাছে এসে কাজ চেয়ে ঘড়ির মতো ঘুরবে।
অস্কারজয়ী এ তারকা বলেন, তবে সায়রার সঙ্গে প্রথম দেখার ব্যাপারটা ভিন্ন মোড় নেয়। তিনি খুবই সুন্দর ও ভদ্র ছিলেন। ১৯৯৫ সালের ৬ জানুয়ারি আমার ২৮তম জন্মদিনে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। যা ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ। তারপর অধিকাংশ সময়ই ফোনে কথা বলতাম আমরা। সে কচ্ছি ও ইংরেজি ভাষায় কথা বলে। তাকে আমি ইংরেজিতে বললাম, আমাকে বিয়ে করতে চায় কিনা। এ সময় খুবই নীরব ছিল সে।
১৯৯৫ সালের ১২ মার্চ সায়রা বানু ও এ আর রহমান বিয়ে করেন। দীর্ঘ ২৯ বছর দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর অবশেষে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। দাম্পত্যজীবনে তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে।