• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘গানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এন্ড্রু কিশোরের নাম’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
‘গানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এন্ড্রু কিশোরের নাম’
এন্ড্রু কিশোর। ছবি: সংগৃহীত

২০২০ সালের আজকের দিনে থেমে যায় প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের সুরের পথচলা।  শনিবার (৬ জুলাই) জনপ্রিয় এই গায়কের চতুর্থ প্রয়াণদিন। চার দশকের বেশি সময় ধরে বাংলা গানে রাজত্ব করেছেন এই কণ্ঠশিল্পী। বাংলা সিনেমায় সর্বাধিক ১৫ হাজার গানে প্লেব্যাক করেছেন। চলচ্চিত্রে তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় গান আর কারো নেই। প্লেব্যাক সম্রাট হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। শিল্পীর কণ্ঠের অসংখ্য গান কালজয়ী হয়েছে।

এন্ড্রু কিশোরকে নিয়ে কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎবলেন, ‍‍`সত্যিকারের একজন বড়মাপের শিল্পী বলতে যা বুঝি তিনি সেটা ছিলেন। ভাই বন্ধু হিসেবে তার সাথে মিশেছি। আমার খুব প্রিয় শিল্পীদের একজন। কোনদিন অহংকার করতে দেখেনি। একসঙ্গে আমরা বেশকিছু গান করেছি। হানিফ সংকেতের ‍‍`ইত্যাদি‍‍` ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে এন্ড্রুদার সঙ্গে কয়েকবার গান করা হয়েছে। আমার সুরে ‍‍`স্বামী-স্ত্রীর ওয়াদা‍‍` প্লেব্যাক করেছিলেন। আমার কাছে প্লেব্যাকের সম্রাট মনে হয় তাকে। অনেক যত্ন নিয়ে চলচ্চিত্রের গান করতেন। এমন শিল্পী চলচ্চিত্রে আর আসবে না। চলচ্চিত্রের গানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এন্ড্রু কিশোরের নাম।‍‍`

১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। তার পিতা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতা মিনু বাড়ৈ। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে রাজশাহীতেই। সেখানেই গানের ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে ‍‍`সুরবাণী‍‍` গানের স্কুলে প্রাথমিকভাবে সংগীত শিক্ষা নেন।

গুণী এই শিল্পী ৪ দশক ধরে সিনেমার গানে জড়িয়ে ছিলেন। ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‍‍`মেইল ট্রেন‍‍` সিনেমায় ‍‍`অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ‍‍` গানের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর মুকুল চৌধুরীর কথায় ও আলম খানের সুরে ‍‍`এক চোর যায় চলে‍‍` গানের পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে— আমার সারা দেহ খেও গো মাটি; আমার বুকের মধ্যেখানে; হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস; আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন; ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে; আমার গরুর গাড়িতে; তোমায় দেখলে মনে হয়; পড়ে না চোখের পলক; প্রেমের সমাধি ভেঙে; সবাই তো ভালোবাসা চায়; ভালো আছি ভালো থেকো; ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালোবাসা পেলাম না; বেদের মেয়ে জোছনা আমায়; তুমি ছিলে মেঘে ঢাকা চাঁদ; পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমার মাঝে খুঁজে পেয়েছি; আমি একদিন তোমায় না দেখিলে; জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প; তুমি আজ কথা দিয়েছো; কী যাদু করেছো বলো না; এক বিন্দু ভালোবাসা দাও।

৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। ১৯৮২ সালে ‍‍`বড় ভালো লোক ছিল‍‍` চলচ্চিত্রের ‍‍`হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস‍‍` গানের জন্য তিনি প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান। সৈয়দ শামসুল হকের কথায় গানটির সুরকার ছিলেন আলম খান। এরপর একে একে ক্ষতিপূরণ (১৯৮৯) চলচ্চিত্রে ‍‍`আমি পথ চলি একা এই দুটি ছোট্ট হাতে‍‍`; পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১) চলচ্চিত্রে ‍‍`দুঃখ বিনা হয় না সাধনা‍‍`; কবুল (১৯৯৬) চলচ্চিত্রে ‍‍`এসো একবার দুজনে আবার‍‍`; আজ গায়ে হলুদ (২০০০) চলচ্চিত্রে ‍‍`চোখ যে মনের কথা বলে‍‍`; সাজঘর (২০০৭) চলচ্চিত্রে ‍‍`সাজঘর‍‍`; কী জাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রে ‍‍`কী জাদু করিলা‍‍` গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

ভারতের খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক আর ডি বর্মণের সুরে ‍‍`সুরজ‍‍` নামে সিনেমায় এন্ড্রু কিশোর হিন্দি গান গেয়েছিলেন। এ ছাড়া, তার সুরে আরও দুটি বাংলা গান করেছেন।

Link copied!