• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে কারণে হচ্ছে না ‘নীল দরিয়া’ সিনেমা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩, ০২:৫৬ পিএম
যে কারণে হচ্ছে না ‘নীল দরিয়া’ সিনেমা
নির্মাতা বদিউল আলম-শাকিব খান- প্রযোজক নাসরিন হেলালী। ছবি: সংগৃহীত

একসময় ঢালিউডের ব্যবসা সফল সিনেমা বলতে শাকিব খানকে বোঝাত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে আরও পরিবর্তন করেছেন ঢাকাই সিনেমার মেগাস্টার খ্যাত এই অভিনেতা। গেল ঈদে প্রিয়তমা সিনেমা দিয়ে ঢালিউডের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন তিনি। সেই ধারাতে বাড়িয়েছেন নিজের পারিশ্রমিকও। তবে, সিনেমা দিয়ে আলোচনায় যেমন আছেন তেমনি সমালোচনাতেও থাকেন শাকিব খান। কিছুদিন আগেই সংবাদের আলোচনা আসে নির্ধারিত পারিশ্রমিক নিয়েও সিনেমা করতে চাচ্ছেন না শাকিব খান, বরং আরও বাড়িয়েছেন নিজের পারশ্রমিক। যে কারণে আটকে আছে নির্মাতা বদিউল আলম খোকনের ‘নীল দরিয়া’ সিনেমার কাজ। তবে, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তীহীন বলে জানালেন সিনেমাটির প্রযোজক নাসরিন হেলালী।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর)  বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন ‘নীল দরিয়া’ সিনেমার প্রযোজক নাসরিন হেলালী। তিনি বলেন, সিনেমাটির কাজ না হওয়ার পেছনে শাকিব খানের কোনো দোষ নেই। শাকিব খান পারিশ্রমিক বেশি চাইতেই পারেন। কিন্তু পরিচালক তার শিডিউল পেলেও কাজ শুরু করতে পারেননি। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এই প্রযোজক।

নাসরিন হেলালী জানান, তার অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল শাকিব খানকে নিয়ে একটি সুস্থ ধারার বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ করার। এ কারণে পরিচালক বদিউল আলম খোকনকে দিয়ে শাকিবকে নিয়ে একটি ছবি করার পরিকল্পনা করেন। ছবিটির জন্য শাকিবের শিডিউল নেওয়া এবং প্রি প্রোডাকশন শেষ হয়। এরমধ্যে শাকিব যুক্তরাষ্ট থেকে দেশে ফেরেন। তখন ‘প্রিয়তমা’ ব্লকবাস্টার হিট হয়। এরপরেই ‘নীল দরিয়া’ করার কথা ছিল শাকিবের।

নাসরিন হেলালী আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে ‘নীল দরিয়া’ ছবির গল্প কাহিনী, টেকনোলজি ব্যাকডেটেড চিন্তা চেতনার ছিল। সৃজনশীল যুগোপযোগী বিশ্বে সমাদৃত সুস্থ ধারার আধুনিক চলচ্চিত্র টেকনোলজি ও আধুনিক চিন্তা চেতনা নিয়ে সিনেমা বানালে দেশে বিদেশে দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করতে পারবে। ‘নীল দরিয়া’ নামে আমার চলচ্চিত্রটি নামকরণ দেওয়া হয়েছিল যেটা পরে আমার মোটেই পছন্দ হয়নি। কারণ নামটি ছিল পুরনো।

পরিচালক খোকনের ভাবনা চিন্তা এবং টেকনোলজি জ্ঞান পুরনো ইঙ্গিত দিয়ে প্রযোজক আরো বলেন, “ব্যাকডেটেড টেকনোলজির কারণে সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে ‘নীল দরিয়া’ না করাই ভালো। শাকিব খান একজন মেধাবী সৃষ্টিশীল রোমান্টিক অ্যাকশন সুপারস্টার। আগামীতে তাকে নিয়ে ব্যবসা সফল হবে এমন ছবি বানাবো। দর্শক যেরকম চায়, ঠিক সেরকমই আধুনিকতার ছোঁয়া থাকবে পুরো ছবিতে।”  

প্রযোজক বলেন,  “আমি বুঝতে পারছি না শাকিবকে নিয়ে বদিউল আলম খোকন ভাই কেন এত সব কথা বলতে গেলেন। যা বলেছেন একান্তই তার মনগড়া কথা। শাকিব খানকে শিল্পী সম্মানি যে টাকাটা দিয়েছিলাম সে পুরোটাই ফেরত দিয়েছেন বরং আমরা তার শিডিউল নষ্ট করেছিলাম। এত বড় সুপারস্টারের শিডিউল পাওয়া খুব মুশকিল। আমরা ব্যর্থ হয়েছি কাজটি করতে। খোকন ভাইয়ের এরকম মন্তব্য দেখে আমি দুঃখিত।”

প্রযোজক আরও বলেন,  “শাকিব খান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শিল্পী সম্মানীর টাকা বাড়াতেই পারেন। এই ডিজিটাল সময়ে তার ক্রিয়েভিটি মেধা দিয়ে আমাদেরকে সময় দেবেন এবং সৃষ্টিশীল কাজ উপহার দিবেন, আমরা তার পারিশ্রমিক নিয়ে তর্কাতর্কি করবো কেন? আর নিজেদের দুর্বলতার দায় সমাজের স্বনামধন্য কোন মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এই বাজে চিন্তাধারা থেকে আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

এর আগে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে নির্মাতা বদিউল আলম বলেন, “এখন শাকিব খানকে দিয়ে ‘নীল দরিয়া’ সিনেমা করতে হলে ৪০ লাখ টাকার সঙ্গে আরও ৬০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। পারিশ্রমিক হিসেবে নেয়া ৪০ লাখ টাকা প্রযোজককে ফেরত দিয়েছেন সে।”

নির্মাতা আরও বলেন, “আগের নির্ধারণ করা পারিশ্রমিকে এখন আর কাজ করতে চাচ্ছেন না শাকিব খান। তাকে নিয়ে এখন কাজ করতে হলে মোট এক কোটি টাকা দিতে হবে তাকে। কিন্তু আমরা শাকিবের সঙ্গে কথা চূড়ান্ত করার সময় যে পারিশ্রমিক ছিল, সেটি দিয়েই চূড়ান্ত করা হয়েছিল তাকে।”

অনেকটা আক্ষেপের সুরে দেশের এই নির্মাতা আরও বলেন, “এখন নতুন কোনো সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হতে এক কোটি বা দুই কোটি টাকা সে নিতেই পারেন। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমরা তো তাকে আগের পারিশ্রমিকে চূড়ান্ত করেছি। এখন সে আমাদের কাছে এটা দাবি করতে পারেন না। তার নৈতিকতার মধ্যে এটি পড়ে না। কমিটমেন্ট ঠিক না থাকলে হবে না তো। এটা খুব অন্যায়।”

যদিও এই পুরো ঘটনাতে এখনো শকিব খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

Link copied!