কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। আরজি করকাণ্ডে প্রতিবাদে পথে নামতে দেখা গিয়েছিল তাকে। অনেক ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন অভিনেত্রী। এবার ছোটপর্দার অভিযুক্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তিনি।
ঠাকুরপুকুরকাণ্ডে গাড়ি দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত ছোটপর্দার পরিচালক ভিক্টো ওরফে সিদ্ধান্ত দাস। তার গাড়ি জখম করেছে ছয়জনকে। তাদের মধ্যে একজন মৃত্যু। খবর ছড়িয়ে পড়তেই অস্থিরতা বেড়েছে। গত সোমবার একটি গণমাধ্যমের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, রূপা ভট্টাচার্য, সাহেব ভট্টাচার্য, তৃণা সাহা। এবার সোচ্চার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
বরাবরের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব অভিনেত্রী। সামাজিকমাধ্যমে স্বস্তিকা লিখলেন, এমনিই নৈরাজ্য। তার মধ্যে মদ খেয়ে এই ভাবে এলোপাতাড়ি গাড়ি চালিয়ে লোককে মেরে ফেললেও যদি কোনো শাস্তি না হয় এবং রাতারাতি বেল পেয়ে যান, তারা যে যার বাড়ি চলে গিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে আর আইন বা ট্রাফিক আইনের কোনো দরকার নেই। যে যা ইচ্ছে তাই করবে, গাড়িচাপা দেবে, খুন করবে এবং রেপ করবে তারপর কিছুই হবে না।
আরজি করকাণ্ডের পরও একইভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। হতাশা, রাগ, যন্ত্রণা ও বিরক্তি ভিড় করেছে তার লেখার পরতে পরতে। তিনি শুরুই করেছেন এভাবে এতদিন অভিনেত্রী জেনে এসেছেন মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো মারাত্মক দণ্ডনীয় অপরাধ। কাউকে পিষে দিলে তো কথাই নেই। দেশের, বিশেষ করে কলকাতার আইন এতটাই কড়া যে, প্রশাসন কাউকে রেহাই দেন না। কোনো প্রভাব খাটে না এ ধরনের অপরাধে। এমনকি গাড়িতে নারী থাকলে তিনিও ছাড় পান না। ঠাকুরপুকুরকাণ্ডে সেই ছবি বদলে যেতে তিনি বিস্মিত।
জানতে চেয়ে স্বস্তিকা বলেছেন, তাহলে এত মারাত্মক একটা ঘটনা ঘটার পর সবাই কী করে জামিন পেয়ে গেলেন? যে অভিনেত্রী বাজার থেকে পালালেন, তাকে নাকি ধরাই হয়নি। তিনি কে? তাকে ছেড়ে দেওয়া হলো কেন?
তিনি বলেন, বেসামাল অবস্থায় ‘নো এন্ট্রি’ রাস্তায় ঢুকে পড়ে ছয়জনকে জখম করলেন কেউ। তাদের মধ্যে একজন মারা গেলেন। এই একজনের মৃত্যুটা কি ইয়ার্কি? তিনি সমব্যথী সেই নিরপরাধ পথচারীর প্রতি, যিনি সকালে বাজার করতে এসে প্রাণ হারালেন। স্বস্তিকার সমবেদনা মৃতের পরিবারের প্রতিও।
সঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিনেত্রী বলেন, যার বাড়ির লোক সকালবেলা বাজার করতে এসে আমাদের জন্য প্রাণ হারালেন, আর যারা হাসপাতালে জীবন নিয়ে লড়ছেন, তাদের দায় কার? তাদের কী হবে? আক্ষেপ করে তিনি বলেন, সহ্য করার একটা সীমা থাকে। সব গিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছি আমরা।
দুর্ঘটনার সময় অভিযুক্ত পরিচালকের গাড়িতে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সান বাংলার কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসু ছিলেন। তিনি তাদেরও শাস্তি চেয়েছেন। তার চোখে তারাও সমান দোষী বলে জানান স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।