ঢাকাই সিনেমার নির্মাতা রায়হান রাফি। গত ঈদে মুক্তি পায় তার ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা ‘তুফান’। যে সিনেমা নিয়ে এই অল্প সময়ের ব্যবধানে আবার আলোচনায় এসেছেন তিনি। এবার চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র বানাবেন রায়হান রাফী।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনের ১৫০ নম্বর কক্ষে ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি এবং ভবিষ্যৎ’ নিয়ে এক আলোচনায় এই ঘোষণা দেন তিনি।
শুরুতে রায়হান রাফী চলচ্চিত্রে তার আগমন, নির্মাতা হয়ে ওঠা, চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিস্থিতি, ভবিষ্যতের চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা করেন। এই আলোচনার পর তিনি উপস্থিত দর্শকের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র বানাবেন কি না, জবাবে রাফী চলচ্চিত্র বানানোর ঘোষণা দেন।
রাফী বলেন, ‘এই জুলাই অভ্যুত্থানে এত এত গল্প। এই জুলাই নিয়ে অনেকগুলো সিনেমা বানাতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে খুব চেষ্টা করব। খুব তাড়াতাড়িই হয়তো নির্মাণ করব। সেটা মুগ্ধকে নিয়ে হোক বা পুরো ঘটনা নিয়ে হোক। কিংবা শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়া নিয়ে হোক। আর আমার তো সত্য ঘটনা বলতে ভালোই লাগে। এত এত টুইস্ট, গল্প, কেন আমি বানাব না।’
রাফী আরও বলেন, ‘সিনেমা এমনই শিল্প, যার মাধ্যমে প্রতিবাদ করা যায়, সমাজব্যবস্থাকে তুলে আনা যায়, এর মাধ্যমে একটা গল্পকে একটা জায়গায় বন্দী করা যায়। এই যে আমাদের একটা আন্দোলন হলো, একটা সময় গিয়ে কিন্তু মানুষ ভুলে যাবে। মানুষ দেখবে না, জানবে না। কিন্তু এগুলো কোনো সিনেমাতে যখন এই দৃশ্যগুলো থাকবে, তখন কিন্তু মনে থাকবে।’
আলোচিত ‘তুফান’ চলচ্চিত্র নিয়েও রায়হান রাফী কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি আমি খুব চালাকি করে বানিয়েছি। তুফানে আমরা কী দেখিয়েছি। তুফান একজন বড় সন্ত্রাসী। সে কীভাবে দেশ দখল করছে। সে একটা দলকে খুন করে আরেকটা দলকে ক্ষমতা দিয়ে দিছে ভোট ডাকাতি করে। এটা কিন্তু আগের গভর্মেন্ট এই কাজই করেছিল। কিন্তু আমি এমনভাবে গানে গানে শাকিব খানের ভাবচক্কর দিয়ে দেখিয়েছি, ওরা অনেকেই বুঝতেই পারেনি যে আসলে কী। আপনারা তুফান যদি আরেকবার খেয়াল করে দেখেন। তুফানের গল্প কিন্তু ডার্ক পলিটিকস। তো আমি পলিটিকসটাকে, ডার্ক পলিটিকসটাকে এমনভাবে দেখানোর চেষ্টা করছি সেন্সর বোর্ড বুঝতেই পারেনি যে আমি আসলে একটা ডার্ক পলিটিকসের গল্প বলছি। ভোট ডাকাতির গল্প বলছি। আমি এভাবেই সিনেমা বানানোর চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে পার পাই, মাঝেমধ্যে পাই না। যেমন অমীমাংসিত পাইনি। এই গল্পটা বললাম এ কারণে যে মানুষ যদি চায়, তাহলে সবকিছুই অর্জন করতে পারে।’