এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক কাজী মারুফ। ঢাকাই চলচ্চিত্রে অনেক ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে ২০১৫ সালের পর তাকে আর সিনেমায় দেখা যায়নি। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন কাজী মারুফ। প্রায় দুই বছর পর ৭ জুলাই দেশে ফিরেছেন একসময়ের ঢাকাই ছবির এই নায়ক।
সম্প্রতি এক গণমাধ্যমের নানান প্রশ্নের সম্মুখিন হন মারুফ। সেখানে তার কাছে সারা বছর ভালো ছবি না আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন নির্ভরযোগ্য শিল্পী নেই, ভালো পরিচালক নেই, প্রযোজক নেই। ওই এক শাকিব খান বছরে কয়টা ছবি দেবেন। এখন কিছু তরুণ নির্মাতা ভালো সিনেমা বানাচ্ছেন। কিন্তু সংখ্যায় তো বেশি নয়। তাদের এগিয়ে নিতে পৃষ্ঠপোষকতাও লাগবে। মৌসুমি নয়, পেশাদার প্রযোজক লাগবে। আমার কথাই যদি বলি, এখন আমার মতো হিরো দেখান, আমার বিকল্প আছে কি? আমারও দর্শক ছিল, সেই দর্শক কই এখন? বলিউড, হলিউডে দেখেন না কত বিকল্প তারকা, পরিচালক, বড় বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যার কারণে সেখানে সারা বছরই হিট সিনেমা পাবেন। সুতরাং আমাদের এখানে শাকিবের বিকল্প আরও চার-পাঁচজন থাকতে হবে। তা না হলে আমাদের সিনেমা সমৃদ্ধ হতে পারবে না। দেখা যাবে, ওই ঈদেই মানুষ সিনেমা দেখছেন, সারা বছর হল ফাঁকা।”
সিনেমার এমন পরিস্থিতির জন্য সবাইকে দায়ী করলেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রির সবাই দায়ী। আগে তো অনেক বড় বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছিল, ভালো ভালো অনেক নির্মাতা ছিল, অনেক অভিনয়শিল্পী ছিল। সবাই এর জন্য দায়ী। আমাদের সিনেমা কিন্তু এক দিন, দুই দিনে খারাপ হয়নি। সময় নিয়েই এটি হয়েছে। যখন এর পতন শুরু হলো, তখন কেউই এই শিল্পকে বাঁচাতে চেষ্টা করেনি। ফলে পতন আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। সবাই নিজের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে জায়গাটাকে শেষ করেছে। অনেকে বলেন দর্শক আসে না।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, “দর্শক আসবে কেন, টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে এসে ভালো বসার জায়গা নেই, ভালো গল্প, ভালো শিল্পী, ভালো নির্মাতার সিনেমা নেই। তাহলে কেন তারা আসবেন? এসবের জন্য আমরা সিনেমার মানুষই দায়ী। বলে লাভ নেই, ওপর দিকে থুতু ছিটালে নিজেদের মুখেই পড়বে।”
এই অভিনেতা ২০১৫ সালের পর দেশে আর সিনেমা করেননি। সে সময় তিনি ‘ছিন্নমূল’ ছবিটি মুক্তি দিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়েন। এছাড়া তখন বাংলা সিনেমা একটা অস্থির অবস্থার মধ্যে ছিল। অভিনয় থেকে বিদায় নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত আমার ছবিগুলো খুব ভালো গেছে। শেষ দিকের ‘ইভটিজিং’, ‘সর্বনাশা ইয়াবা’ মোটামুটি গেছে। কিন্তু ‘গার্মেন্টস শ্রমিক জিন্দাবাদ’ বা ‘ছিন্নমূল’ ভালো চলেনি। এসব কারণে কিছুটা ক্ষোভেই অভিনয় ছেড়ে চলে গেছি।”