‘দিল সে` সিনেমায় অভিনয় করে সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়ে ছিলেন অভিনেত্রী মণীষা কৈরালা। এই সিনেমার মণীষার সঙ্গে অভিনয় করেছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মণি রত্নম।
‘দিল সে’ সিনেমাকে মনে করা হয় শাহরুখ খান ও মণীষার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি। রোমান্টিক ড্রামা। এ সিনেমা দিয়েই বড় পর্দায় অভিষেক হয় প্রীতি জিনতার।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘দিল সে’ নিয়ে কথা বলেছেন মনীষা কৈরালা। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি আসামের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পটভূমিতে নির্মিত। ছবিতে মনীষা একজন আত্মঘাতী নারী সন্ত্রাসীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শেষ দৃশ্যে তার ও শাহরুখের চরিত্র, উভয়েরই মৃত্যু হয়।
তবে ২৬ বছর পর সিনেমাটি নিয়ে সম্প্রতি এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মনীষা জানান, ‘দিল সে’ ছবির মূল চিত্রনাট্যের সমাপ্তি বর্তমান চিত্রনাট্যের চেয়ে একেবারেই আলাদা ছিল। মূল চিত্রনাট্য অনুযায়ী শাহরুখের চরিত্রটির মারা যাওয়ার কথা ছিল না, তবে শেষ মুহূর্তে সিনেমাটির সমাপ্তি বদলে ফেলা হয়।
সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে মনীষা বলেন, ‘আমার মূলত রাম গোপাল ভার্মার সাথে একটি ছবিতে কাজ করার কথা ছিল। ওই সময়ই এই ছবিটি আমার হাতে আসে। প্রথমে তারা অন্য কাউকে নেওয়ার কথা ভাবলেও পরে আমার কাছেই আসে। শিল্পী হিসেবে আমি এমন কাজ করতে চাইছিলাম যা আগে আগে কখনও করিনি। মণি রত্নম বললেন, আমাকে একজন সন্ত্রাসীর চরিত্রে অভিনয় করতএ হবে। তবে এ-ও স্পষ্ট করে দিলেন যে, কাজটা আমি চিরাচরিতভাবে করি সেটি তিনি চান না। আমাকে একেবারেই সাধারণ একটি মেয়ের মতো লাগতে হবে। তবে তার মধ্যেই মেয়েটির ব্যাখ্যাতীত যন্ত্রণা ও ক্ষোভ ফুটিয়ে তুলতে হবে।`
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এর মাধ্যমে শিল্পী হিসেবে চরিত্রটির নেতিবাচক দিক অন্বেষণের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলাম আমি। আমি সবসময় মিষ্টি মিষ্টি ও ইতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছি, কিন্তু এই চরিত্র ছিল অন্যরকম। এটি আর দশটা চরিত্রের মতো ছিল না, ব্যাপারটা আমার পছন্দ হয়েছিল।’
শাহরুখ খানের চরিত্রের মৃত্যু সম্পর্কে মনীষা কৈরালা বলেন, `প্রথম যে চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়েছিল, তাতে দুই চরিত্রই ভালোবাসার চেয়ে বড় কাজের জন্য বিসর্জন দেয়। প্রথম চিত্রনাট্যে নায়ক মেয়েটিকে মরতে দেয়। এই সমাপ্তিই চূড়ান্ত হয়েছিল সবার সম্মতিতে। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে সমাপ্তিটা বদলে ফেলা হয়।’
মনীষা বলেন, চূড়ান্ত সংস্করণে দেখানো হয়েছে, নায়কের ভালোবাসা এতটাই তীব্র ছিল যে সে মেয়েটিকে থামাতে চেয়েছিল, তবে মেয়েটিকে ছাড়া বাঁচতেও পারছিল না। `নায়ক মেয়েটিকে থামায়। কিন্তু সে কাজ করতে গিয়ে নিজেই মারা যায়। একে তার বড় ত্যাগ হিসেবে দেখানো হয়। মূল স্ক্রিপ্টে এই বিষয়টি ছিল না। তখন আমার প্রথম চিত্রনাট্যই বেশি পছন্দ হয়েছিল, কারণ ওদের মিলন হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। কখনও কখনও অপূর্ণ ভালোবাসা পূর্ণ ভালোবাসার গল্পের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়।`
মুক্তির পর `দিল সে` সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলেও বক্স অফিসে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। মণীষাকে শেষ গেছে সঞ্জয় লীলা বানসালির `হীরামান্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার` সিনেমায়।