যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদের জানাজা সম্পন্ন হলো। শুক্রবার (২৬ জুলাই) ভার্জিনিয়া দার আল নুর ইসলামিক কমিউনিটি মসজিদে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। যেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল বলে জানিয়েছেন শিল্পীর ছেলে আযরাফ রাকিন আহমেদ।
শনিবার (২৭ জুলাই) তিনি বলেন, “বাবার প্রথম জানাজা হয়েছে ভার্জিনিয়ার দার আল নুর মসজিদে। প্রায় দুই হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল।"
তবে শাফিন আহমেদের মরদেহ আনার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি জানিয়েছেন রাকিন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে নিয়ে আসার বিষয়টি এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। অনেক ধরনের প্রসেস আছে, সে প্রসেসগুলো সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চলছে।"
মাইলস ব্যান্ডের অন্যতম ভোকালিস্ট শাফিন আহমেদ জুলাইয়ের ৯ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে কনসার্ট করেন তিনি। ভার্জিনিয়ায় গত ২০ জুলাইয়ে আরেকটি কনসার্টে অংশ নেওয়া আগেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন হন গায়ক। হাসপাতাল থেকেই বৃহস্পতিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
মাইলসের কি বোর্ডিস্ট মানাম আহমেদ জানিয়েছেন, শাফিন হৃদরোগে ভুগছিলেন অনেক দিন ধরেই। তার হৃদযন্ত্রে রিং পরানো ছিল। সমস্যা ছিল কিডনিতেও।
আশি ও নব্বইয়ের দশকের কিশোর-তরুণ শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ ব্যান্ড তারকা দেশে ও দেশের বাইরে কনসার্টও মাতিয়েছেন গিটার হাতে। তার ‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি’, নীলা, আজ জন্মদিন তোমার, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’ এর মত গান মুখে মুখে ফিরেছে সবার।
বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনের দুই মহারথী সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম এবং সুরকার কমল দাশগুপ্তের ছেলে শাফিন নিজে ছিলেন বেইজ গিটারিস্ট, সুরকার এবং গায়ক। ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম।
বড় ভাই হামিন আহমেদসহ ইংল্যান্ডে পড়তে গিয়ে পশ্চিমের সংগীতের সঙ্গে সখ্য হয় শাফিনের। শুরু হয় তার ব্যান্ড সংগীতের যাত্রা।
ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে তারা গড়ে তোলেন ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। প্রথম কয়েক বছর তারা বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে ইংরেজি গান গাইতেন। এরমধ্যেই প্রকাশিত হয় দু’টি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’। পরে মাইলসের বাংলা গানের প্রথম অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ বের হয় ১৯৯১ সালে।
ওই অ্যালবামের জনপ্রিয়তার পর বিটিভিতে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানে দেখা যেতে থাকে মাইলসকে। ধীরে ধীরে মাইলস দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ডদলে পরিণত হয়।
মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘কি যাদু’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।