শহীদ বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনার ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউট। শনিবার (১৯ আগস্ট) লালমাটিয়াস্থ গ্রাফিকস আর্ট ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলামিস্ট ও সংগঠক রুস্তম আলী খোকন।
সেমিনারে জহির রায়হানের ছেলে অনল রায়হান বলেন, ‘‘যে সময়ে আমরা বাবাকে হারিয়েছি সে সময় তার হারাবার কথা নয়। পুত্র হিসেবে বাবাকে আমি খুব কমই দেখেছি আসলে। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি দেশ বিভাগের পর থেকে, শিল্প, সাহিত্য, রাজনীতি, সংস্কৃতির চর্চা অন্যতম হয়ে উঠতে পেরেছিলেন তারপর যখন মুক্তিযুদ্ধ গেল, মুক্তিযুদ্ধে তার অংশগ্রহণ এবং অবদান; যুদ্ধ শেষে দেশ স্বাধীন হবার পর দেড়টা মাস তার অংশগ্রহণ এবং অবদান, সব মিলিয়ে তিনি ইতিহাসের অন্যতম চরিত্র হয়ে গেছেন।’’
গ্রাফিক আর্টস ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ নীহার রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমরা এই মহান গল্পকার, উপন্যাসিক ও নির্মাতার কাছ থেকে জীবন থেকে নেয়ার মত অসাধারণ চলচ্চিত্র পেয়েছি। সেই সময়টিতে এ চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করেছিলো পাকিস্তান সরকার। প্রতীকীভাবে তিনি পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থার সৈরশাসনের বিরুদ্ধে বাঙ্গালির মনোজগতে নাড়া দিয়েছিলেন। জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে আমরা স্বল্প মেয়াদি কোর্স চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। আমার মনে হয় জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউট একদিন দেশের বড় একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।’’
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘জহির রায়হান আমাদের কাছে একটি চেতনার নাম। জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউট সেই চেতনাকে অগ্রসর করার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করি স্বল্পমেয়াদী কোর্সগুলোতে জহির রায়হানের রাজনৈতিক ভাবনার প্রতিফলিত সাহিত্য ও চলচ্চিত্রকে অনুধাবন করার কাজটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে।’’
নাট্যজন শংকর সাওজাল বলেন, ‘‘জহির রায়হানসহ দেশের সূর্যসন্তানদের যদি নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেয়া না যায় তাহলে উন্নত সংস্কৃতির বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। আমি সব সময়তে চেষ্টা করি এসব আয়োজনে নিজেকে যুক্ত করতে।’’
এসময় জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক শারমিনা চৌধুরীর সঞ্চালনায় পুরো আয়োজনটি সম্পন্ন হয়েছে।