কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন দেশে ফিরেছেন ৩১ মে । দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর দেশে ফিরলেন জনপ্রিয় এই শিল্পী। বর্তমানে তিনি ঢাকায় নিজের বাসায় আছেন। এ মাসের শেষ দিকে নিয়মিত চেকআপের জন্য তাকে আবার সিঙ্গাপুর যেতে হবে। সোমবার (৩ জুন) খবরটি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর মেয়ে ফাইরুজ ইয়াসমীন বাঁধন।
তিনি বলেন, ‘নিয়মিত চেকআপের জন্য আম্মুকে সিঙ্গাপুর যেতে হয়। এরপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা দাঁতের সমস্যা দেখতে পান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ফেব্রুয়ারি একটি অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচার শেষে আম্মুকে রেডিওথেরাপি নিতে হয়। এরই মধ্যে রেডিওথেরাপি কোর্স শেষ হয়। তবে রেডিওথেরাপির কারণে আম্মুর শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। আগামী এক বছর আম্মুকে নির্দিষ্ট সময় পরপর সিঙ্গাপুর যেতে হবে। চিকিৎসকের নির্দেশমতো তাঁকে চলতে হবে।’
গত ফেব্রুয়ারিতে গুঞ্জন ওঠে, আবারও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন সাবিনা ইয়াসমীন, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে জোর চর্চা। শুধু তা-ই নয়, সাবিনা ইয়াসমীনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করে মূলধারার বেশ কিছু গণমাধ্যমও। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের বরেণ্য এই সংগীতশিল্পীর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য। আসল সত্যটা কী? সবকিছু খোলাসা করে তখন দেশবাসীর প্রতি বার্তা পাঠান সাবিনা ইয়াসমীন। সেই বার্তায় তিনি বলেছিলেন, নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুরে তিনি। একই সঙ্গে নিজের বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যম থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য পাচ্ছেন বলেও জানান শিল্পী নিজে।
সাবিনা ইয়াসমীনের ভাষ্য, ‘আমি আপনাদের সাবিনা ইয়াসমীন। প্রতিবছরই নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যেতে হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এবার চেকআপে এসে আমার দাঁতে একটু সমস্যা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ফেব্রুয়ারি আমার দাঁতে ছোট একটি সার্জারি হয়, যা সফল হয়। এরপর চিকিৎসক যেভাবে বলবেন, সেভাবেই চলব। পরে আপনাদের দোয়ায় দেশে ফিরব, ইনশা আল্লাহ।’
অযথা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্তিতে না ফেলতেও অনুরোধ জানান বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী। এ ধরনের তথ্যে তাঁর এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলেও মন্তব্য করেন কালজয়ী এই সংগীতশিল্পী।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাবিনা ইয়াসমীনের নাম। গেয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত দুই শিল্পী মান্না দে ও কিশোর কুমারের সঙ্গেও। চলচ্চিত্রে গান গেয়ে ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারও অর্জন করেছেন তিনি। ১৯৬২ সালে রবীন ঘোষের সুরে প্রথম ছোটদের গানে কণ্ঠ দেন। সর্বশেষ ২০২০ সালে অভিনেত্রী কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে কণ্ঠ দেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথমবার সুরকার হিসেবে ছবিটির চারটি গানের সুরও করেন সাবিনা ইয়াসমিন।