‘আমাদের সেনাবাহিনী অত্যন্ত সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বরেণ্য চিত্রনায়ক সোহেল রানা। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘কারফিউ থাকুক, এটা আমরা চাই না। কারফিউ মানে নিজের ভাই প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর্মি নামানো তো শেষ পদক্ষেপ। আমাদের সেনাবাহিনী অত্যন্ত সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। যেখানে তারা একটি গুলিও ফোটায়নি। কাছে এসে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণ করেছে।’
তিনি বলেন, কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে অনেক আগ থেকেই কথা বলেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বারবার বলা হয় কেন? দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর। তার সঙ্গে যদি আরও ১২ বছর যোগ করা হয়, তাহলে ওই সময়ের একজন মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয় ৬৫। এ বয়সে কেউ আর চেষ্টা করেন না বা স্কুল-কলেজে ভর্তি হন না। তাদের সন্তানদের বাবার কারণে কোটা সিস্টেমে চাকরি ও ভর্তি হতে হবে– এটা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার শামিল। এ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম ও ভাঙচুর অনেক হয়েছে।
হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। আন্দোনকারীরা জয়লাভ করেছেন। আদালতের রায়ে এটি প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলনকালে তাদের নামে যে মামলা হয়েছে, সেটি এখন তুলে নেওয়া উচিত। যারা দুর্ভাগ্যজনকভাবে আহত কিংবা নিহত হয়েছেন, তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। শুধু মৌখিক সমবেদনা জানালে চলবে না। তাদের পরিবারের যদি একজন উপার্জনক্ষম সদস্য থাকেন, যদি তাদের পরিবার স্বচ্ছল না হয়, তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারের তরফ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা করা উচিত।
আন্দোলনের সময় দু’পক্ষের লোকজনই নিহত কিংবা আহত হন। আইনকে যারা ব্যবহার করেন, আর সেটা করতে গিয়ে যদি তারা আইনের অপপ্রয়োগ করেন, তার বিচার হওয়া দরকার। অনেক জায়গায় না হলেও একটা বিষয় আমরা এবার খেয়াল করেছি, তা হলো রংপুরে আবু সাঈদ নামে যে যুবকটি মারা গেছেন, তাঁর পেছনে কোনো লোকজন ছি না।
তিনি খোলা হাতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যুবকটি পুলিশকে ক্ষোভের সুরে বলেছিলেন– আমাকে গুলি কর। সেখানে একজন দারোগা তাঁকে গুলি করলেন! তাঁকে তো জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল। ওই দারোগাকে জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। দেশে তো আইন আছে। এ ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার। সে তদন্তে যারা প্রমাণিত হবে, তাদের আইনের আওতায় আনা দরকার। সাঈদের বিষয়টি তদন্ত করার কিছু নেই। এটি তো প্রকাশ্যে হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেট নেই। জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শুনেছি মেইন জায়গা থেকে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আশা করছি, দু-এক দিনের মধ্যে দুর্ভোগ শেষ হয়ে যাবে। আমরা তো চাই, দেশ আবার আগের মতো সুন্দর ভাবে চলুক।