• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

নতুন সিনেমা নেই, চরম সংকটে ঢালিউড


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৫, ১২:২৫ পিএম
নতুন সিনেমা নেই, চরম সংকটে ঢালিউড
শাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত

সুপারস্টার শাকিব খান। সিনেমায় তিনি থাকলে প্রযোজকেরা চোখ বন্ধ করে লগ্নি করার সাহস পান। তবে তার সিনেমাগুলোও যখন দর্শক পায় না তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে ঢালিউডে চলছে চরম সংকটের দিনকাল। গেল কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়া শাকিব অভিনীত ‘তুফান’ সিনেমার পর একটি সিনেমাও আর দর্শক পায়নি প্রেক্ষাগৃহে।

গত বছরের ১৭ জুন কোরবানি ঈদের সিনেমা হিসেবে বাংলাদেশের হলগুলোতে মুক্তি পায় ‘তুফান’। রায়হান রাফি পরিচালিত সিনেমাটিতে শাকিবের বিপরীতে দেখা গেছে বাংলাদেশের মাসুমা রহমান নাবিলা ও কলকাতার মিমি চক্রবর্তীকে। সিনেমাটি বেশ ধুমধাম করে টাকা কামিয়েছে দেশ-বিদেশের বাজারে।

এরপর ঢালিউডের গল্পটা কেবলই বিষাদের। গেল বছরের ২১ জুন থেকে সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেখান থেকে ব্যবসায়িক সাফল্যের দেখা পায়নি একটিও। এ তালিকায় আছে শাকিব খানের ‘দরদ’ ছবিটিও। বিগ বাজেটের প্যান ইন্ডিয়ান মুভির তকমা নিয়েও ছবিটি সিনেমাহলে সাফল্য দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।

সর্বশেষ অমিতাভ রেজা চৌধুরী ‘রিকশা গার্ল’ মুক্তি পেয়েছে গেল ২৪ জানুয়ারি। বিশ্বের ৩০টির বেশি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে সিনেমাটি। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারও জিতেছে। এছাড়া ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ রাজ্যের ৫২টি শহরে চলচ্চিত্রটি দেখানো হয়। অথচ এমন একটি সিনেমা বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে দর্শক পাচ্ছে না!

অনেক আলোচনার জন্ম দিয়ে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে ‘৮৪০’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত সিনেমা এটি। পরিতাপের বিষয় হলো, বেশ জমকালো আয়োজনে এটি মুক্তি পেলেও ব্যবসায়িকভাবে সফল হওয়ার মতো দর্শক পায়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।

এছাড়াও জয়ার ‘নকশী কাঁথার জমিন’, মেহজাবিনের ‘প্রিয় মালতী’র মতো বহুল আলোচিত সিনেমাগুলো ফ্লপ হয়েছে।

এইসব ফ্লপের কারণ হিসেবে বেশিরভাগ সিনেমাসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতিই দায়ী। এ মুহূর্তে দর্শক হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে খুব একটা স্বস্তিবোধ করছেন না। তবে আসছে রোজা ঈদে দর্শক খরার এই সংকট কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (বিপণন ও মিডিয়া) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগের তুলনায় মানুষ থিয়েটারে কম আসছে এখন। কেন আসছে না সেটা তো সবার জানা। দেশের পরিস্থিতি অবশ্যই বড় কারণ। তারপর সিনেমাগুলোও দেখার মতো কি না সেটাও ভাবতে হবে। তবে ‘প্রিয় মালতী’ দেখতে সিনেপ্লেক্সে কিছু দর্শক আসছেন।’

মধুমিতা হলের কর্ণধার ও চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ এই সংকট নিয়ে বলেন, ‘যখন শাকিব খানের সিনেমা চলে না তখন বুঝতে হবে সময় ভালো না। শাকিবের ‘তুফান’ চার সপ্তাহ চলেছিল। এরপর ‘দরদ’ চললো দুই সপ্তাহ। তাও দেশের সব হলে ছবিটি চলেনি। এ সিনেমার যা বাজেট ও প্রচার খরচ ছিল, এটিও ফ্লপ বলতে হবে। তবুও আমি ‘দরদ’ ছবিকে হাতের গোনায় রাখতে চাই। ভালোই দর্শক পেয়েছে। কিন্তু এ দুটি ছবির বাইরে সবই তো মুখ থুবড়ে পড়েছে। এভাবে তো আসলে একটা শিল্প টিকতে পারে না।’

নওশাদ মনে করেন, বাংলাদেশে যেসব সিনেমা বছরজুড়ে মুক্তি পায় সেগুলোর বেশিরভাগেরই মান ও দর্শক টানার যোগ্যতা নেই বললেই চলে। তারপর নানা রকম দুর্যোগ, দুর্ঘটনা, অব্যবস্থাপনা তো আছেই।

কেবল সিনেমায় দর্শক খরার সংকটই নয়, ঢালিউড হুমকিতে আছে সিনেমা নির্মাণ কমে যাওয়াতেও। বিগত ৬ মাসে ৬টি নতুন ছবির ঘোষণাও আসেনি। নেই শুটিংয়ের ব্যস্ততাও। অনেক ছবির নির্মাণকাজই রয়েছে বন্ধ। বেশকিছু সিনেমার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

Link copied!