চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সোমবার (৪ মার্চ )দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটি’ ও ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’-এর সদস্যদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
সভায় প্রতিমন্ত্রী আরও যোগ করেন, সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকার আরও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান দেওয়া যায় সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারে সরকার সেটাও নিশ্চিত করতে চায়। সরকারি অনুদানে যাতে রুচিশীল ও মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায় সেটাই সরকারের লক্ষ্য।
মতবিনিময়কালে প্রতিমন্ত্রী ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটি’ ও ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’-এর সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।
নির্দেশনা প্রদানকালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটি প্রাপ্ত প্যাকেজ প্রস্তাবসমূহ বাছাই করে গুণগত মানের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করবে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অনুদান প্রত্যাশীরা বাছাই কমিটির সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ সদস্যদের সামনে উপস্থাপনা প্রদান করবে। উপস্থাপনার ভিত্তিতে বাছাই কমিটির সদস্যরা নির্ধারিত ক্ষেত্রে নম্বর প্রদানপূর্বক আরও সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবে। এ সময় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরা পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। পরবর্তীতে চূড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য বাছাই কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত অনুদান প্রত্যাশীরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যদের সামনে উপস্থাপনা প্রদান করবেন। উপস্থাপনার ভিত্তিতে অনুদান কমিটি নির্ধারিত ক্ষেত্রে নম্বর প্রদানপূর্বক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে। এ সময় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ এবং অভিনেত্রী আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরমেন্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ এবং রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনমুখী, রুচিশীল ও শিল্পমানসমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত) এর ভিত্তিতে সরকারি অনুদান প্রদান করা হয়।