কিংবদন্তি রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় দিকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তার ভাই শিবলী মহম্মদ বলেন, ‘আজও তানপুরা নিয়ে তার বড় ভাই সংগীত চর্চা করেছেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। তখন দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঁইয়া জানান, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, শিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।
ময়নাতদন্তের জন্য সাদি মহম্মদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নূরজাহান রোডের বাসার তৃতীয় তলায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
এদিকে গত বছরের ৮ জুলাই মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকে বিষণ্নতায় ভুগছিলেন শিল্পী সাদি মহম্মদ।
বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও শিল্পীর পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নীপা জানান, গত বছরের ৮ জুলাই মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকেই একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান শিল্পী সাদি মহম্মদ। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না তিনি। মা হারানোর বেদনা সম্ভবত তিনি নিতে পারেননি।
সাদি মহাম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বভারতীতে শান্তিদেব ঘোষ ও কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গান শিখেছেন তিনি।
২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সাদি মহম্মদ সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তাঁর ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অসংখ্য রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও করেছেন তিনি।
সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।