সত্তর দশকের কলকাতার আলোচিত ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র সবচেয়ে পুরনো ঘোড়াদের একজন তাপস দাস মারা গেছেন। রবিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তাপস দাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যান্ড তারকা রূপম ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে রূপম ইসলাম বলেন, “এরকম কত বাঙ্ময় মুহূর্তই রয়ে গেল শুধু…। সচল হয়েই থেকে গেল গানজীবনের অনন্ত পথ চলা… থেমে গেল বললে ভুল হবে, মারাত্মক ভুল…। বাপিদা- সশরীরে তুমি আর নেই, কিন্তু সর্বত্র এভাবেই তুমি থাকবে। লাল সেলাম। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।”
জানা যায়, তাপস দাস দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। রোববার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে কলকাতায় তার মৃত্যু হয়েছে।
১৯৭৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম বাংলা স্বাধীন রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকে আধুনিক বাংলা গানের ধরন বদলে দিয়েছিল দলটি। এই দলের সবচেয়ে পুরনো সদস্যদের একজন তাপস দাস। যিনি সবার কাছে বাপী দা নামেই পরিচিতি।
তাপস দাসের চিকিৎসা তহবিলের জন্য কলকাতায় একাধিক কনসার্ট হয়েছে। বাংলাদেশের ব্যান্ড কমিউনিটিও একটি উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই ‘ভালোবাসি জ্যোৎস্নায়’ শীর্ষক সেই কনসার্ট ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে কনসার্টের টিকিটও বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই এলো শিল্পীর মৃত্যুর খবর।
সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক (১৯৭৭), অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব (১৯৭৮) এবং দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি (১৯৭৯) এই তিন অ্যালবাম ভারতীয় রক মিউজিকের মাইলস্টোন। আশির দশকের গোড়ায় ব্যান্ড ছেড়ে নিজেদের কর্মজগতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকলে, তবে ১৯৯৫ সালে ফের মুক্তি পায় মহীনের ঘোড়াগুলির ‘আবার বছর কুড়ি পরে’। এই অ্যালবামেরই গান ‘পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে’-যা আজকের জেনারেশনের কাছেও ততটাই জনপ্রিয়।
২০১৫ সালে বাপি মহীন এখন ও বন্ধুরা নামে একটি বাংলা ব্যান্ড গঠন করেন। একই বছরের ৬ অক্টোবর তিনি লগ্নজিতা চক্রবর্তী, মালবিকা ব্রহ্মা এবং তিতাস ভ্রমর সেনের সঙ্গে মহীন এখন ও বন্ধুরা নামে একটি ইপি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামটিতে পাঁচটি গান এবং মহীনের ঘোড়াগুলির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনকারী একটি অ্যালবাম রয়েছে।