• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাধীনতা পুরস্কার হাতে পেলেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪, ১১:৪৯ এএম
স্বাধীনতা পুরস্কার হাতে পেলেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গানের কবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান সহ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি পেলেন স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৪‍‍`।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ হাতে তুলে দেন।    

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ছাড়াও পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন—স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ,  ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজ বা জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।

গত ১৫ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

বাংলা গানে যে কজন মেধাবী গীতিকার রয়েছেন তাদের মধ্য রফিকউজ্জামান অন্যতম। আধুনিক, চলচ্চিত্র, দেশাত্মবোধক সব মৌলিক গানে রয়েছে তার অবাধ বিচরণ। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের গানে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের অবদান অনন্য। তার লেখা বহু গান আমাদের চলচ্চিত্রের গানের ভাণ্ডারকে উজ্জ্বলতর ও সমৃদ্ধ করেছে। তবে এবার তার সেই অবদানের স্বীকৃতি মিলেছে।

১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ঝিনাইদহ জেলার লক্ষ্নীপুরের ফুরসুন্দিতে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন (এসএসসি), সরকারি মাইকেল মদুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবনে ১৯৬৮ সালেবাংলাদেশ বেতারে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এখানে চাকরি করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে লন্ডনের চ্যানেল এস-এ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৭ সালে বৈশাখী টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

১৯৬৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বেতারে নিয়মিত গীতিকার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। ইতিমধ্যে তার প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। ১৯৭৩ সাল থেকে তিনি নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখছেন। প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখেছেন তিনি। ১৯৬১-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান মঞ্চ, বেতার ও টেলিভিশনের জন্য শতাধিক নাটক লিখেছেন ও অভিনয় করেছেন।

একাধিকবার শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে ‘চন্দ্রনাথ’ ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার ও ২০০৮ সালে ‘মেঘের কোলে রোদ’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকারের জাতীয় চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর লিখা গান গেয়ে অনেকেই জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন।

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের লেখা জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক’, ‘কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল’, ‘যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে’, ‘আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়’, ‘আমার বাউল মনের একতারাটা’, ‘চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ’, ‘পদ্ম পাতার পানি নয়, দিন যাপনের গ্লানি নয়’, ‘মাঠের সবুজ থেকে সূর্যের লাল’, ‘যেখানে বৃষ্টি কথা বলে’, ‘আমি নদীর মতন বয়ে বয়ে’, ‘শুক পাখিরে, পিঞ্জিরা তোর খুলে দিলাম আজ’, ‘আকাশের সব তারা ঝরে যাবে’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার শত্রু বলে গণ্য হলাম’প্রভৃতি ।
 

Link copied!