সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি সুরকার ও শিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিন আজ। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সত্তর পেরিয়ে জীবনের ৭১ বসন্তে পা রেখেছেন ‘কুইন অব মেলোডি’ খ্যাত এই সংগীত তারকা।
রুনা লায়লাই একমাত্র শিল্পী যিনি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান এই তিন দেশেই সমানভাবে জনপ্রিয়। পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের সংগীত ক্যারিয়ারে ১৮টি ভাষায় গান গেয়েছেন দশ হাজারেরও বেশি। তাইতো তার জন্মদিন ঘিরে থাকছে দেশের দর্শক ) ভক্তদের নানা উন্মাদনা। ঘড়ির কাটা বারোটা ছোঁয়ার আগেই সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে মেতে উঠেছে সহকর্মী ও ভক্ত অনুরাগীরা। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত করে তুলছেন তাকে।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্ম গ্রহণ করেন রুনা লায়লা। বয়স যখন আড়াই বছর তখন তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। সে সূত্রে তার শৈশব কাটে পাকিস্তানের লাহোরে। সংগীতশিল্পী মায়ের কাছে শিখেছেন সংগীতের প্রাথমিক ব্যাকরণ। এরপর করাচির সংগীতজ্ঞ আব্দুল কাদের পিয়ারাঙ্গ ও হাবীব উদ্দিন খানের কাছে তামিল নেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে গান শুরু করেন রুনা। এরপর মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ ছবির মাধ্যমে প্লেব্যাকের খাতায় নাম লেখান। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্লেব্যাক করেন পাকিস্তানের অনেক ছবিতে।
ক্যারিয়ার জুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ছয় বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এছাড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।
রুনা লায়লার কণ্ঠে সর্বশেষ প্রকাশিত মৌলিক গান ছিল গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ও শফিক তুহিনের সুর করা ‘যদি প্রশ্ন করো কতটা ভালোবাসি তোমাকে, ও আমার দেশ জবাব দেব, ততটাই ভালোবাসি, যতটা ভালোবাসি আমার মাকে’।
এর আগে জন্মদিন প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুনা লায়লা বলেন, ‘‘দিনটি এলে বেশ ভালো লাগে। সবাই বিশেষ এ দিনে আমাকে মনে করেন। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানাজন নানা কথা লিখেন খুব গুছিয়ে। সেসব কথা আমি মন দিয়ে পড়ি। নিজের সম্পর্কে অবগত হই। জন্মদিন এলে আব্বা আম্মার কথা খুব মনে পড়ে। মনে পড়ে আমার বোন দীনা লায়লার কথা। সবাই আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন, আল্লহ যেন ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন।’’