ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ববিতার জন্মদিন রোববার (৩০ জুলাই)। ১৯৫৩ সালের আজকের দিনেই পৃথিবীর আলো দেখেছেন কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। ফরিদা আক্তার পপি তার আসল নাম হলেও সিনেমা জগতে ববিতা নামেই দর্শকমনে গেথে আছেন তিনি। ৭০-এর দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী পার করেছেন জীবনের ৬৯ বসন্ত। পা রাখলেন ৭০ বছরে।
অভিনয় জগতে পা রেখে খুব অল্প সময়েই দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন এই নায়িকা। ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা। যা আজও দাগ কেটে আছে সিনেমাপ্রেমীদের মনে।
১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক।
বাবার চাকরি সূত্রে তারা বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। শৈশব এবং কৈশোরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউসের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে। ববিতার পরিবার একসময় বাগেরহাট থেকে ঢাকার গেন্ডারিয়াতে চলে আসে।
তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়বোন সুচন্দা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, বড়ভাই শহীদুল ইসলাম ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেজভাই ইকবাল ইসলাম বৈমানিক, ছোটবোন গুলশান আখতার চম্পা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং ছোটভাই ফেরদৌস ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। এ ছাড়া অভিনেতা রিয়াজ তার চাচাত ভাই। চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান তার ভগ্নিপতি।
মা ডাক্তার থাকায়, ববিতা চেয়েছিলেন ডাক্তার হতে। কিন্তু শিক্ষাজীবনে খুব বেশি দূর না যেতে পারলেও বড়বোন সুচন্দার অনুপ্রেরণায় চলচ্চিত্রে পা রাখেন ববিতা। ১৯৬৮ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংসার’ সিনেমার মাধ্যমে আত্নপ্রকাশ করেন তিনি।
চলচ্চিত্র জগতে তার প্রাথমিক নাম ছিলো ‘সুবর্ণা’। জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ সিনেমাতে অভিনয় করতে গিয়েই তার নাম হয়ে যায় ‘ববিতা’। ১৯৬৯ সালেই নায়িকা হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন ববিতা।
তার চলচ্চিত্র কর্মজীবনে আসার পেছনে বড়বোন সুচন্দার অনেক অনুপ্রেরণা রয়েছে। ১৯৬৮ সালে বড়বোন সুচন্দা অভিনীত ও জহির রায়হান নির্মিত ‘সংমিত’ সিনেমার মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ ঘটে ববিতার। এতে রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন, যদিও মুক্তি পায়নি সিনেমাটি।
ক্যারিয়ারে অভিনয়ের দক্ষতায় প্রশংসার পাশাপাশি অসংখ্য পুরস্কারও অর্জন করেছেন ববিতা। তিনি সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ছয়বার বাচসাস পুরস্কার, চারবার আজীবন সম্মাননা, জহির রায়হান পদক, বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার, এরশাদ পদক, বাংলা চলচ্চিত্র প্রসার সমিতি পুরস্কার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি পুরস্কার অর্জন করেন বরেণ্য এই নায়িকা।