জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর)। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় তিনি মারা যান। তার স্মরণে আজ গাইবেন তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী রেখা শিকদার ঝুমা ও এস এম শফি।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে নারীকেন্দ্রিক মিডিয়া এজেন্ট ‘উইমেন বাংলাদেশ’। সরাসরি সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে দর্শকরা ফোন করে অতিথির সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি গানের অনুরোধ করতে পারবেন। ওমেন বাংলাদেশ ‘হৃদয়ের কথা’এই পর্বটি প্রচার হবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।
গান নিয়ে ঝুমা বলেন, ‘সালমান শাহের ছবি দেখে দেখে বড় হয়েছি। তার ছবি ও গানগুলো এখনো সবার মুখে মুখে। ‘হৃদয়ের কথা; অনুষ্ঠানে সালমান শাহ অভিনীত জনপ্রিয় গানগুলোই গাওয়ার চেষ্টা করব। আশা করছি গানগুলো শ্রোতাদের ভালো লাগবে।’
এস এম শফি বলেন, ‘সালমান শাহকে নিয়ে আমার গবেষণা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে। আমার প্রিয় নায়ক তিনি। তার এমন সিনেমা রয়েছে যে, একটি সিনেমা আমি দুই শতবার দেখেছি। তিনি আমার হৃদয়ে সাড়া জীবন থাকবেন। আমি তার জনপ্রিয় কিছু গান গাওয়ার চেষ্টা করব।’
সালমান শাহ ছিলেন একাধারে অভিনেতা ও মডেল। তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম প্রতিভাবান, জনপ্রিয়, সফল এবং কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার প্রকৃত নাম ছিল চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। গণমাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের রাজপুত্র, নায়কদের নায়ক, আধুনিক ঢালিউডের প্রথম সুপারস্টার, অমর মহানায়ক এবং স্বপ্নের নায়ক উপাধিতে ব্যক্ত করা হয়।
টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয়জীবন শুরু হলেও ১৯৯০-এর দশকে তিনি চলচ্চিত্রে অন্যতম জননন্দিত শিল্পী হয়ে ওঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায়। একই ছবিতে নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনের অভিষেক হয়। সাড়ে তিন বছরের মতো স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার অধিকাংশই ছিল ব্যবসাসফল।
জনপ্রিয় এ নায়ক নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশে সারা জাগানো অনেক চলচ্চিত্র যেমন— বিক্ষোভ, সুজন সখি, কন্যাদান, স্বপ্নের ঠিকানা, মায়ের অধিকার, এই ঘর এই সংসার, সত্যের মৃত্যু নেই, আনন্দ অশ্রু ইত্যাদিতে অভিনয় করার মাধ্যমে দেশের শীর্ষ তারকায় পরিণত হন।
তিনি পারিবারিক গল্প, কমেডি, সামাজিক ও রাজনৈতিক গল্প, অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্র, গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত গল্প, আসন্ন যুগের গল্প, রোমান্স এবং ট্র্যাজেডির মতো বিভিন্ন ঘরানার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
তাকে একাধারে প্রভৃতি প্রকৃতির চলচ্চিত্রে দেখা যেত যেখানে তিনি নিজের বহুমুখী অভিনয় প্রতিভা, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন ধরনের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে নিজের সক্ষমতার পরিচয় দেন। ফলস্বরূপ ব্যবসায়িক সাফল্য ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন এবং ঢালিউডে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতায় পরিণত হন।
তার তিনটি চলচ্চিত্র স্বপ্নের ঠিকানা, সত্যের মৃত্যু নেই ও কেয়ামত থেকে কেয়ামত ঢালিউড বক্স অফিসে সর্বকালের শীর্ষ দশটি সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে।
তিনি সর্বস্তরের জনগণের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ও ফ্যাশন সেন্সের জন্য বিখ্যাত হন। গণমাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের সেরা ফ্যাশন আইকন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা অর্থপূর্ণ সিনেমার একটি নতুন ব্র্যান্ড প্রবর্তন এবং আধুনিক যুগের নায়কদের অনুপ্রাণিত করার জন্য সালমান এবং তার শৈল্পিকতা ও ফ্যাশনকে কৃতিত্ব দেন।