নিজেকে মিডিয়ার সন্তান মনে করেন বলে জানিয়েছেন গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস। তিনি বলেছেন, “আমরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে আলোচনা করেছি। হারুন ভাই খুব সুন্দরভাবে আমাদের আইনের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি অথবা অপু কেউই কোনো আইনি প্রতিযোগিতা করতে আসিনি। আমাদের কাজ হলো, বিনোদন দেওয়া।”
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
কৌশিক হোসেন তাপস বলেন, “ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ভাইকে আমরা আস্থার জায়গা মনে করি। ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ অসাধারণ একটা আস্থার জায়গা। তারা এত সুন্দর করে সবকিছু সামাল দিচ্ছেন, তাতে আমরা খুব গর্বিত।”
জানা গেছে, এক ফেসবুক পোস্টে গানবাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নি তার স্বামী কৌশিক হোসেন তাপস ও শবনম বুবলীকে জড়িয়ে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন। বলেছিলেন, তাপসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বুবলীর। তবে ওই পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর তা মুছে দিয়ে মুন্নি জানান তার ফেসবুক আইডি হ্যাকারদের কবলে পড়েছিল।
এরপর অপু বিশ্বাসের সঙ্গে মুন্নির কল রেকর্ড ফাঁস হয়। সেখানে বুবলীর নামে বিস্তর অভিযোগ আনতে শোনা যায় মুন্নিকে। তবে কল রেকর্ডটি এডিট করা ছিল। মুন্নির কথা থাকলেও সুকৌশলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল অপুর কথা। এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন মুন্নি। শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় এক সাক্ষাৎকারে কল রেকর্ড ফাঁসের অভিযোগে অপুকে অভিযুক্ত করেন তিনি। সেইসঙ্গে জানান অন্যের কথায় বুবলীকে সন্দেহ করেছেন তিনি এবং অপু তাকে ব্যবহার করেছেন। এ ঘটনার পর বুবলী মুন্নিকে ধন্যবাদ জানালেও অপু ইঙ্গিতে পুরো বিষয়টি সাজানো বলে উল্লেখ করেন। পরে ভিডিওবার্তায় সরব হন তিনি।
এ ঘটনায় ঢালিউড অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের নামে একটি অভিযোগ করেন তাপস। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ডিবিতে অপু বিশ্বাসকে তলব করা হয়। এদিন দুপুর ১২টার দিকে অপু বিশ্বাস ও কৌশিক হোসেন ডিবি কার্যালয়ে হাজির হন।
ডিবি প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাপস। তিনি বলেন, “অপু হয়ত জিনিসটা অন্যরকমভাবে বুঝেছেন। কিংবা তার যে পয়েন্ট অব ভিউ ছিল, সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত। তার সঙ্গে আমার বা আমার স্ত্রীর সম্পর্ক নেই। আমরা যার সঙ্গে কাজ করছি, তার সঙ্গে হয়ত অপুর আগে থেকেই ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। যা একান্তই তার ব্যক্তিগত।”
তাপস বলেন, “আমার বেড়ে ওঠা মিডিয়ায়। আমি এটিএন বাংলায় কাজ করতাম। যখন থেকে বেসরকারি নিউজ চালু হয়, তখন থেকেই আমি গণমাধ্যমের সন্তান। সবাইকে আমি নিজের পরিবার মনে করি। আপনাদের সবার সঙ্গেই আমার অলিখিত রক্তের সম্পর্ক আছে। এটা আমি বিশ্বাস করি।”
সাংবাদিকদের তাপস বলেন, “যেহেতু একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একটি এডিটেড অডিও ভার্সন যায়। সেটার ব্যাপারে আমাদের সাক্ষাৎকারে ঘোর আপত্তি ছিল। এখনো থাকবে। কারণ এ ধরনের অডিও ভবিষ্যতে কেউ যেন প্রকাশ না করে। যে ব্যাপারে সবাইকে বিনীতভাবে অনুরোধ করতে চাই। যেহেতু আজ এমন একটা সময় এসে দাঁড়িয়েছি, যেখানে ব্যক্তিগত আলাপ আমরা করতে ভয় পাব, আমাদের কথাবার্তা রেকর্ড হবে সেজন্য ভয় পাব। তাহলে আমরা জনবিচ্ছিন্ন ও যান্ত্রিক হয়ে যাব। সুতরাং এটাই চাই, ব্যক্তিগত ব্যাপার বা যতটুকু আমরা প্রকাশ করতে চাই না, সেই রেকর্ডেড ভার্সন যেন কারও না ছড়ায়।”
গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী বলেন, “কথা প্রসঙ্গে হারুন ভাইয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তিনিই সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর তার কথা অনুযায়ী আমি ব্যক্তি তাপস হিসেবে একটি অভিযোগ দিই। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, অপু বিশ্বাসের নামে কোনো অভিযোগ করিনি। আমার অভিযোগ ছিল, ওই কল রেকর্ড কীভাবে ফাঁস হয়েছে, কেন ফাঁস হলো, অথবা পরবর্তীতে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত কল রেকর্ড ফাঁস যাতে না হয়, সে বিষয়ে।”