দেহটা ছাড়া কিছুই আমার ছিল না, বললেন পপি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
দেহটা ছাড়া কিছুই আমার ছিল না, বললেন পপি
পপি। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

দীর্ঘদিন আড়ালে ছিলেন চিত্রনায়িকা পপি। লুকিয়ে বিয়েও করেছেন। কিন্তু জমি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে বিরোধের জেরে খোঁজ মিলল অভিনেত্রীর। বাবার জমি একাই ভোগ করতে চান পপি, এমন অভিযোগ করে থানায় জিডি করেছে পপির পরিবার।

এমন গুরুতর অভিযোগে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দীর্ঘদিন পর মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছেন অভিনেত্রী। এবার এলেন ক্যামেরার সামনে।

দীর্ঘ তিন বছর পর সামনে এসে পপি বললেন, ‘দেহটা ছাড়া কিছুই আমার ছিল না।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পপির একটি ভিডিও প্রকাশ করেন বিনোদন সাংবাদিক অভি মইনুদ্দিন। ওই ভিডিওতে তার বিরুদ্ধে মা-ভাই-বোনের আনা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি পপি। দীর্ঘ ২৮ বছর সুনামের সঙ্গে চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তে ক্যামেরার সামনে কথা বলছি একজন ব্যর্থ মানুষ হিসেবে। ব্যর্থ মানুষ বলছি এই কারণে—সবার মন জয় করতে পারলেও দীর্ঘ ২৮ বছর যাদের জন্য কাজ করেছি, এই হাতে যাদের লালন-পালন করেছি তাদের কাছে আমি অযোগ্য একজন মানুষ। তাদের মনমতো চলতে পারিনি। সে জন্যই বলেছি আমি একজন ব্যর্থ মানুষ। মানুষ তো সব সময় সবার কাছে ভালো হতে পারে না।
আমি যখন ইনকাম করেছি দুহাতে দিতে পেরেছি তখন আমার পরিবারের কাছে অনেক প্রিয় একজন মানুষ ছিলাম। এখন তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী দিতে পারি না। তাই তাদের কাছে গলার কাঁটা, শত্রু এবং অপছন্দের মানুষ।’

এরপর এ নায়িকা বলেন, ‘দুই দিন যাবৎ দেখলাম আমার পরিবার কতটা নিচে নামতে পারে। কত হিংস্র ব্যবহার করতে পারে। কত নোংরা শব্দ ব্যবহার করতে পারে। মিডিয়ার কাছ থেকে সব সময় আমি সহযোগিতা পেয়েছি। পরিবারের কয়েকটা মানুষের মিথ্যা কিছু কথাবার্তা, মিথ্যা অভিনয়, নাটক মিথ্যা অভিযোগ বলার সাথে সাথে যে মানুষগুলো আমাকে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট করার কথা তারাই মানুষের কথা অনুযায়ী আমাকে ভুলভাবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বাজেভাবে উপস্থাপন করেছেন। এর থেকে দুঃখজনক কিছুই হতে পারে না। যাদের জন্য কাজ করেছি আজ তারা আমার না। এ জন্যই আল্লাহ বলেন, কেয়ামতের মাঠে কেউ কাউকে চিনবে না।’

পরিবারের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই জানিয়ে পপি বলেন, ‘কাদের নামে অভিযোগ করব? অভিযোগ করে বাইরের মানুষের নামে। যেহেতু আমার ভাই-বোন, বাবা-মাকে অনেক ভালোবাসি। তাই তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। তাদের দ্বারা আমার জীবনে অনেক কিছু ফেস করেছি। নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়েছি। আমি যে আয় করেছি, তারা সব নিয়ে নিয়েছে। আমার সাথে বেঈমানি করেছে। আমার টাকা দিয়ে কেনা সম্পত্তি আমার নামে ছিল না। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য ছিল। আমার দেহটা ছাড়া কোনো কিছুই আমার ছিল না। সব কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আমিও তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। একটা পর্যায়ে এসে মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অবলম্বন লাগে। একটা সময় যখন জানতে পারলাম আমার পরিবার আমাকে ঠকিয়েছে। জানার পরও চুপ ছিলাম। তাদের দ্বারা অনেক নির্যাতিত হয়েছি। আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমার টাকা চুরি করেছে। আমাকে খুন করতে খুনিকে টাকা দিয়ে ভাড়া করেছে। আমার আপন মা, ভাই ও বোন জড়িত ছিল।’

পপি বলেন, ‘পৃথিবীতে সব মা-ই মা না। খারাপ মা-ও আছে। দুর্ভাগ্যবশত আমার মা হয়তো আমাকে সেই পরিমাণ ভালোবাসতে পারেনি। আমার পরিবারের কাছে সব সময় সোনার ডিম পাড়া একটা হাঁস ছিলাম। দুধ দেওয়া একটি গরু ছিলাম। টাকা ছাপানোর মেশিন ছিলাম। সন্তান হিসেবে কখনোই ভালোবাসাটা পাইনি। তার পরও কোনো অভিযোগ নেই। এখনো নেই। একটা মানুষ যখন মেশিন নিয়ে পরিণত হয় তখন তার মূল্য মেশিন হিসেবে থাকে। মানুষ হিসেবে থাকে না। আমার বাবা-মা আমার সাথে অনেক বড় বিশ্বাসঘাতক করেছে। আমার সব টাকাপয়সা বোনের অ্যাকাউন্টে ছিল। তার পরও কিছু বলিনি। ২০০৭-এর ঘটনা বলছি। তখন জানতে পারলাম কোনো কিছুই আমার নেই। তখন সিনেমার মুরব্বি মিলে সব কিছু ঠিকঠাক করে দিয়েছিলেন।’

গত সোমবার পপির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। পরিবারের জিডির সূত্র ধরে জানা যায়, পৈতৃক জমি দখলে নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার, শিপনসহ সোমবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন শিববাড়ী ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে হাজির হন। বাধা দিলে এক পর্যায়ে ফিরোজা পারভীনসহ সবাইকে হুমকি দেন পপি ও তার স্বামী।

Link copied!