আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। হাল না ছাড়া এই ভাইরাল বয় অভিনয়, গান, আবৃত্তির পর এবার আবারও নির্বাচনের মাঠে দৌড়াচ্ছেন। বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য ঘোষিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থি হতে মরিয়া তিনি। দফায় দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন হিরো আলম।
বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু ভোটার তালিকায় গরমিল অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র প্রথমে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা পরে নির্বাচন কমিশন থেকেও বাতিল করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুপুর ১টার দিকে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
এরপর হিরো আলম মনোনয়ন গ্রহণ ও বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১০ জানুয়ারি আপিল করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে। সেই আপিলেও গত ১২ জানুয়ারি খারিজ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিরো আলমের আইনজীবী ইয়াররুল ইসলাম প্রার্থিতা ফিরে পেতে রিট আবেদন করেন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনের সচিব, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানান হিরো আলমের আইনজীবী ইয়াররুল ইসলাম। এর আগে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ থেকে এ রিটের বিষয়ে অনুমতি নেন হিরো আলমের আইনজীবী।
এদিকে হিরো আলম নিজের ফেসবুকে বর্তমান অবস্থা নিয়ে দুটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “একবার হাইকোর্ট, একবার নির্বাচন কমিশন, এই নিয়ে চলছে আমার জীবন, দৌড়ে ওপরে আছি। আগামীকাল হাইকোর্টের শুনানি।”
একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও আলোচিত হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (সিংহ মার্কা) হয়েছিলেন। ওইসময় তিনি ৬৩৮ ভোট ভোট পান। এতে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তবে ভোটের মাঝমাঠে গিয়ে অবশ্য তিনি নির্বাচন বর্জন করেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশন শুনানির পর তা বাতিল করে। পরে উচ্চ আদালতে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে তৎকালীন বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের হাতে পছন্দের ‘সিংহ’ প্রতীক তুলে দেন।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন।