নন্দিত অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী, বিপাশা হায়াত। তার বাবা প্রখাত অভিনেতা আবুল হায়াত, স্বামী জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকির আহমেদ। বিপাশার জন্মদিন রোববার (২৩ মার্চ)। অভিনয় না করছেন বলে আজকাল তিনি নিজেকে একজন চিত্রশিল্পী হিসেবেই পরিচিত করতে বেশি আনন্দবোধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ আজকের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। আজ বিপাশা হায়াতের বায়ান্ন বছর পূর্ণ হলো। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর জন্মদিনে সংবাদ প্রকাশ পরিবারের শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা-য় পড়াশোনা। বাবা আবুল হায়াত, বোন নাতাশা হায়াত, স্বামী তৌকীর আহমেদ, ছেলেমেয়ে আরিব ও আরিশা, বোনজামাই শাহেদ শরীফ খান। সাংস্কৃতিক পরিবারেই তার বিচরণ।
টিভিতে প্রথম অভিনয় ‘খোলা দুয়ার’ নাটকে আশির দশকে ১৯৮৪ সালে। প্রথমবার জনপ্রিয়তা পায় হুমায়ূন আহমেদ-এর ‘অয়োময়’ নাটকের ‘লবঙ্গ’ চরিত্রের মাধ্যমে। এ চরিত্রের জনপ্রিয়তার পরে তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।

অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক/টেলিফিল্ম : রূপনগর, হারজিত, থাকে শুধু ভালোবাসা, অতিথি, নকশী পাঁড়ের মানুষেরা, চেনা অচেনা মুখ, গ্রহণকাল, দ্বৈরথ, অঙ্কুর, অহর্নিশ ভালোবাসে একজন, কথা ছিল, আশিক সব পারে, উজান পাখি, বৃষ্টির দিন, ভুলোমন সেইজন, বিশ্বাসঘাতক, আমি তোমায় ভালোবাসি, হারানো সুর, আকাশের কাছাকাছি, প্রিয়জন, কালো গোলাপের কাব্য, তোমার বসন্ত দিনে, দুই বোন, চখাচখি, সেই ভুবনে, শুরুর কবিতা, অন্যপৃষ্ঠা, বিবর্ণ প্রজাপতি, বীজমন্ত্র, সঙ্গী, কখনো দুজন, অরণ্যে একদা, টেরিবাবু, শঙ্কিত পদযাত্রা, সুখের নিশান, চাই, হেঁট, ভোর হয়ে এলো, একা, লজ্জা।
নিজের রচিত নাটক প্রায় ৪০টি। তার প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘শুধু তোমাকেই জানি’। প্রিয় এই অভিনেত্রীর ‘অয়োময়’-এর লবঙ্গ জনপ্রিয় এবং প্রশংসিত চরিত্র। ‘রূপনগর’ নাটকে সমূহ বিপদে থাকা তৌকীরকে বিপাশা দিয়েছিল মানসিক সাপোর্ট। চমৎকার একটি চরিত্র ছিল। ‘থাকে শুধু ভালোবাসা’ নাটকে ফেরদৌসের বিপরীতে বিপাশার করুণ প্রেমের অভিনয় দর্শক আজও মনে করে। ‘তোমাকে ছুঁয়ে’ নাটকে নিজের সময়ের আর একজন তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সারের সাথে স্ক্রিন শেয়ার করে অসাধারণ অভিনয় করেছে। এমন অনেক নাটক আছে বিপাশার যেগুলো কালজয়ী।

বিজ্ঞাপনে নব্বই দশকের পর অন্যান্য সময়েও দেখা গেছে। বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে। আলোচিত বিজ্ঞাপনের মধ্যে রয়েছে, জনি প্রিন্ট শাড়ি, লাক্স, এসেমসি ওরস্যালাইন, ভ্যাসলিন, প্রাণ পাউডার মিল্ক, চপস্টিক নুডলস, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেন্জ, ফ্রেশ লবণ, সিঙ্গার ওয়াশিং মেশিন। তার অভিনীত সিনেমা, আগুনের পরশমনি, জয়যাত্রা, বৃষ্টি।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় ‘আগুনের পরশমনি’ (১৯৯৪) ছবিতে। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার (দর্শক জরিপ)- ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০০।
এছাড়া ইউনেস্কো, অন্যদিন পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, যায় যায় দিন-সহ আরো পুরস্কার পেয়েছে।