জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের জন্ম ১৯৮৯ সালের ১১ অক্টোবর বগুড়া জেলার সদর থানার কাটনারপাড়া এস কে লেনে। সেই হিসেবে আজ জীবনের ৩৫টি বসন্ত পেরিয়ে গেলেন নায়িকা, পা দিলেন ৩৬ বছরে। বাবা উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং মা শেফালী বিশ্বাসের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
অভিনেত্রীর বিশেষ এ দিনের শুরু থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ভাসাচ্ছেন তার শুভাকাঙ্ক্ষী, সহকর্মী ও অনুরাগীরা। তার মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন বিনোদন সাংবাদিকও। তারা এরই মধ্যে অপুর সঙ্গে তোলা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অপু বিশ্বাসের ফেনপেইজ এডমিন থেকেও। েসেখানে অপুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্রে আপনার আগমনের সময় সুখকর কোনো পরিবেশ ছিলো না।
অশ্লীলতার কালো ছায়ায় অন্ধকারের ধুম্রোজালে চলচ্চিত্র যখন ঘোর অন্ধকারে ঘূর্ণিপাক খাচ্ছিলো,বাংলা সিনেমা থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলো ঠিক তখনি নতুন আলোর মশাল হাতে নিয়ে এই রুপালী জগতে আপনার বিচরণ। একটা সিনেমার অভাবনীয় ব্যবসায়িক সাফল্য কিভাবে চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট বদলে দিতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ কোটি টাকার কাবিন। চলচ্চিত্র শিল্পের বাগ-বদল ঘটাতে যে সিনেমাগুলো অনন্য ভূমিকা পালন করেছে তার মধ্যে অন্যতম কোটি টাকার কাবিন। ইতিহাস সৃষ্টিকারী মুভির নায়িকা হয়ে ঢালিউডে পা রাখেন আপনি। এই মুভির সাফল্যর রেশ ধরে নির্মাতা-প্রযোজক দর্শকদের কাছে কোটি টাকার স্বপ্নকন্যার মতোই নিজেকে আর্বিভাব করেছিলেন। ‘কোটি টাকার কাবিন’ থেকে শুরু করে বহু হিট সিনেমায় আপনার উপস্থিতি বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রথম সিনেমায় সাবলীল অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে সকলের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন যা আজও বিদ্যমান।
আপনার দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারে আপনি শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন, একজন প্রেরণা হয়ে উঠেছেন। যে কোনো কঠিন মুহূর্তকে একগাল পরিচিত হাসি আর এক অদ্ভুত নিজস্বতা দিয়ে পরিবেশন করাটাই যেনো আপনার চরিত্র। বারবার চোখের চাহনি আর মিষ্টি হাসিতে ঝড় তুলুন অভিনয় প্রেমী দর্শকদের মনে। কাজ নিয়ে বারবার এক্সপেরিমেন্ট করুন,এভাবেই আপনার সফলতা বারবার আকাশ ছুঁক ...। আশা করি,আপনার জীবন আরও সমৃদ্ধি,সুখ ও সফলতায় ভরপুর হবে। আপনি আমাদের সকলের কাছে একজন রোল মডেল হিসেবে রয়েছেন এবং আপনার ভবিষ্যতের প্রতিটি দিনই আগের চেয়ে আরও সুন্দর ও সফল হবে। আপনার জন্য শুভকামনা। শুভ জন্মদিন ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাস।
দেড় যুগের দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ার অপু বিশ্বাসের। কাজ করেছেন শতাধিক সিনেমায়। যার সিংহভাগই ব্যবসাসফল। ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে তার জায়গাও বেশ পাকাপোক্ত। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন স্টেজ শো এবং বিজ্ঞাপনেও কাজ করছেন অপু। তিনি দায়িত্বে আছেন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হিসাবেও।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রীর পুরো নাম অবন্তী বিশ্বাস অপু। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ঢাকাই সিনেমায় রাজত্ব করেছেন। চলচ্চিত্রে কাজ করার পাশাপাশি স্টেজ শো ও বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় তাকে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ক্যারিয়ারে আগের মতো সেই ব্যস্ততা নেই। সংসার ও সন্তান নিয়েই তার যত ব্যস্ততা। তবে সবকিছু সামলে মাঝে মাঝে শোবিজে সময় দিচ্ছেন।
অপু বিশ্বাস ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমাতে নায়িকা হিসেবে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। সিনেমাটি বক্স অফিস কাঁপানো ব্যবসা করায় অপু বিশ্বাস রাতারাতি তারকায় পরিণত হন।
সেই থেকে শাকিব খানের সঙ্গে তার জুটি দর্শকদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমার পর শাকিব-অপু জুটির একই নির্মাতার ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদীমা’ সিনেমাগুলোও ব্যবসা সফল হয়।
এছাড়াও ‘মিয়া বাড়ির চাকর’, ‘তোমার জন্য মরতে পারি’, ‘কথা দাও সাথী হবে’, ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’, ‘তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা’ ছাড়াও অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। অপু বিশ্বাস অভিনীত শতকরা ৯৫ ভাগ সিনেমার নায়কই শাকিব খান।
সর্বশেষ শাকিব খানের সঙ্গে বুলবুল বিশ্বাসের ‘রাজনীতি’ সিনেমাতে অভিনয় করেন অপু বিশ্বাস। ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল শাকিবের সঙ্গে বিয়ে হয় অপু বিশ্বাসের। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি ক্লিনিকে শাকিব-অপুর একমাত্র ছেলে আব্রাম খান জয়ের জন্ম হয়। কিন্তু সেই ঘর বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০১৮ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসাবেও নাম লিখিয়েছেন অপু বিশ্বাস। এরই মধ্যে তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘অপু-জয় চলচ্চিত্র’ থেকে নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘লাল শাড়ি’ মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরে। সেখানে তিনি নায়িকা হিসাবে অভিনয়ও করেছেন।