• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
রাশিদ খানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ

কান্না ভেজা চোখে মনের কথা বললেন হৈমন্তী শুক্লা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
কান্না ভেজা চোখে মনের কথা বললেন হৈমন্তী শুক্লা
ভাইফোঁটায় হৈমন্তী শুক্লের বাড়িতে উস্তাদ রাশিদ খান। ছবি: সংগৃহীত

রাশিদ খানের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল ভাই-বোনের। প্রতিবছর ভাইফোঁটার দিনটা তাঁদের দেখা হবেই। শেষ দু‍‍`বছর আর একে অন্যকে দেখতে পাননি এই বিশেষ দিনে। কান্না ভেজা চোখে একনাগারে বলে গেলেন হৈমন্তী শুক্লা। আজ আর কথা বলার মতো অবস্থাও নেই তার।সবকিছু যেন কেমন নিমেষে থমকে গিয়েছে। শুধু বারবার মনে পড়ছে ছোট ভাইয়ের মুখ।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে চারিদিকে শুধু একটাই খবর। অবস্থা আশঙ্কাজনক ওস্তাদ রাশিদ খানের। সকলেই যেন খানিক থমকে গিয়েছিলেন বৈকি এরপর বেলা গড়াতেই খবর এল জীবনাবসান সংগীত জগতের কিংবদন্তী শিল্পীর। যার কণ্ঠে মঞ্চ মাত হয়েছে বারবার। শাস্ত্রীয় সংগীতের যে সম্ভার তিনি ভক্তদের উজাড় করে উপহার দিয়েছেন একাধিক গান। সেই সুর সম্রাটের প্রতিবছর কিছু নিয়ম বাধা ছিল। তিনি সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার কাছে ভাইফোঁটা নিতেন। এই দিনটা কিছুতেই মিস করতেন না তিনি। ছোট ভাই এই পৃথিবীতে নেই। যেন ভাবতে পারছেন না শিল্পী। কান্না ভেজা চোখে মনের কথা ভাগ করলেন হৈমন্তী শুক্লা।

বললেন. ‘আমার সঙ্গে ভীষণ হৃদয়ের সম্পর্ক ছিল। ও অত বড় পণ্ডিত মানুষ, আমিও কখনও ভাবতাম না, ও কখনও বলেনি। আমি যতটুকুই গান গাইতাম, ও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে বারবার। খুব ভালোবাসত আমার গান শুনতে। অনেক বাংলা গান শুনেছে। আমার বাবার যে ক্লাসিক্যাল শিক্ষা ছিল, সেটা ওকে নাড়া দিয়েছে। খুব পছন্দ করতেন সবসময়। কোথাও দেখা হলে বা এক গাড়িতে কোথাও গেলে কত গল্প হত। আজ আর কিছুই বলতে ভালোলাগছে না। ও পান খেতে খুব ভালোবাসত। আমায় দেখলেই পান বানাতে শুরু করত। সব মনে পড়ছে।’

দুই ভাইবোন এক জায়গায় হলেই নানা ধরনের গল্প জমে উঠত। কত গান, কত মনের কোণে জমে থাকা আলোচনা। সে যেন আর ফুরায় না। আজ তাই মন কিছুতেই মানছে না শিল্পীর। বললেন, ‘আমি কেনা জর্দা খেলে বারণ করত। বলত, দিদি তুমি এগুলো খাবে না। অন্য একটা এনে দিচ্ছি সেটা খাও। চতুর্দিক থেকেই খুব খারাপ একটা সময়। শেষবছর ভাইফোঁটা আর দিতে পারিনি। দুই বছর আগে সেই শেষ...। বাচ্চা ছেলের মতো আমার কাছে এলে কত কী বলত। আমি কপালে চুমু খেতাম। কত আদর করতাম। যেখানেই থাকুক ও সুরলোকে থাকুক। এর থেকে বেশি আর কী-ই বা বলতে পারি!

বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে জীবনাবসান ঘটে শিল্পীর। নভেম্বর মাস থেকে টানা জীবনযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শেষ রক্ষা হল না। তবু মানুষের হৃদয়ে তাঁর সৃষ্টি দিয়ে আজীবন থেকে যাবেন রাশিদ খান।
 

Link copied!