শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও, মানসিকভাবে ভালো নেই অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর শিল্পকলা একাডেমি থেকে তাকে চাকরি হারাতে হয়। চাকরি হারালেও উচিত কথা বলতে থেমে থাকেনি আ.লীগ সমর্থক এই অভিনেত্রী।
ড. ইউনূস সরকারের যাত্রা শুরু হলে জ্যোতি এক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে অর্জিত সরকার যাত্রা শুরু করল বৈষম্য দিয়ে।’ সেই স্ট্যাটাসের ঝাল পোহাতে হচ্ছে গুণী এই অভিনেত্রীকে।
সামাজিক মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে জ্যোতিকা জ্যোতি এক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘চাকরি থেকে ছাড়ানো হলো, আফসোস নাই । কিন্তু—, এক সিনেমায় কাস্টিং করলো, পরিচালক বাসায় এসে গল্প শোনালেন,জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুটিং। চরিত্র নিয়ে ভাবনা শুরু হলো, অনেকদিন পর শুটিং করবো-ভালোলাগা শুরু হলো। অফিসিয়াল ফরমালিটিস কমপ্লিট করতে হবে এমন কথা হলো, তার ৩দিন পরই পত্রিকায় দেখলাম এক বিদেশি একট্রেসকে কাস্টিং করা হয়েছে আমার জায়গায়!’
এরপর অভিনেত্রী লিখেন, ‘ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হবে, সেখানে কোন না কোন দায়িত্বে থাকার কথা ছিলো।আগেও ছিলাম। পরিস্থিতি যা বুঝলাম দায়িত্ব তো দূরের কথা, ফেস্টিভ্যালে না যাওয়াই ভালো মনে হলো।’
জ্যোতি বলেন, ‘এক আপার মেয়ের বিয়ে। গায়ে হলুদ, রং খেলা, বিয়ে, বৌভাত। কতশত প্ল্যান! আরেক আমন্ত্রিত অভিনেত্রী গেস্ট বললেন, জ্যোতিকা জ্যোতি এলে তিনি আসবেন না।’
সব শেষে এই অভিনেত্রী লিখেন, “এপ্রিলে এক নতুন বাসায় শিফট হলাম। আমার কুকুর আছে বলে নিলাম। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন কোন সমস্যা নেই। বরং আমার পরিচয় তার বাসার ভারাটিয়া হিসেবে তাকে আরো গর্বিত করবে বলে জানালেন। জুলাইয়ে যখন দেশে তুমুল গণ্ডগোল তখন বড়িওয়ালা বললেন, আমার নিরাপত্তার দায়িত্ব তার। আমি যেন কোন চিন্তা না করি। আগস্টের ৬ তারিখ জানালেন, আমাকে নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তাই আমি যেন কুকুর নিয়ে বাসার নিচে না যাই। তবে তার কথায় মনে হলো বাসা ছেড়ে দিলেই ভালো । ১৬ আগস্ট আমাকে ফোন করে বললেন আমি যেন আগামীকালই বাসা ছেড়ে দেই। তিনি কোনকিছুতেই আমাকে সময় দিতে রাজি না। ১দিনের মধ্যে ওই বাসায় মালপত্র রেখে আমি আমার কুকুর নিয়ে একটি গেস্ট হাউজে প্রায় ১৩দিন থেকে নতুন এক বাসা নিলাম। কোন আত্মীয়-বন্ধুর বাসায় থাকা যায়নি কারণ আমার সাথে কুকুর আছে, আবার কেউ কেউ আমাকে নিয়েও শঙ্কিত ছিলো।
দিনদশেক পর আমার এক বন্ধু ওই বাসা থেকে মালপত্র উদ্ধার করে কিন্তু বাড়িওয়ালা আমার ২মাসের এডভান্স ফেরত দিলেন না। এগুলো আসলে কি ? ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা! এসব পোহাতে হবে কতদিন ? নাকি দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে?”
