বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) তে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এই দাবি জানানো হয়েছে। দাবি গুলো হলো- আহতদের চিকিৎসা তত্ত্বাবধান করা। শিবা শানু, জয় চৌধুরী, আলেকজান্ডার বোদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা, যাদের ডিভাইসের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে শিল্পী সমিতিকে মেনে নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের বিজয়ী সদস্যদের এফডিসিতে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় এফডিসির শিল্পীরা।
এদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)তে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বলেছে, তারা দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে। একই সঙ্গে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে চিত্রনায়িকা ময়ুরীর মেয়েকে এক সাংবাদিক প্রশ্নকে ঘিরে। সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি আপনার মায়ের আগের ছবি দেখেছেন’। এরপর শিল্পীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে। এক সময় খল অভিনেতা শিবা শানু এই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে অফিস থেকে বের করে দেন শানু। এর মধ্যে সেটি থামাতে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা। এসময় শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুরো এফডিসি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। মারামারিতে রীতিমতো রক্তাক্ত হন কয়েকজন সংবাদকর্মী।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বিবৃতি বলা হয়, সদ্য নির্বাচিত কমিটির বিজয় উপলক্ষে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে আমাদের আমন্ত্রণে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ভাই-বোনেরা সংবাদ গ্রহণ করতে এসেছিলেন। তখন অনাহুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির কতিপয় নির্বাচিত সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের হাতাহাতি হয়। আমরা জানতে পেরেছি এই ঘটনায় বেশ কজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন যা আমাদের ব্যথিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা এই ঘটনার জন্য সকল গণমাধ্যমের সাংবাদিক ভাই-বোনদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
আরও বলা হয়, পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছি। এরইমধ্যে শিল্পী সমিতি নেতা ও সাংবাদিক নেতাদের যৌথ আলোচনায় প্রযোজক আরশাদ আদনানকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে এখানে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয়, আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল, রত্না রয়েছেন।