ভারতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা আজমি। অভিনয়ের বাইরে তিনি একজন সোশ্যাল এক্টিভিস্টও বটে। তাই সমাজের সবদিকেই তিনি নজর রাখেন। নারী অধিকার থেকে নারীবাদের ধারণা সম্পর্কে তাই তার দৃষ্টিভঙ্গি অন্য আর দশজন নারীর চেয়ে ভিন্ন।
নারীবাদ বলতে শাবানা ঠিক কী ভাবেন? ‘নারীবাদ মানে মেয়েরা এগিয়ে, ছেলেরা পিছিয়ে- এমনটা নয়। আজকাল অনেকেই বড় ভুল ব্যাখ্যা করেন। সে সব দেখেই চিন্তা হয়’- নারীবাদ নিয়ে সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছেন শাবানা আজমি।
এ বিষয়ে শাবানা বলেন, দেখুন জাভেদ (জাভেদ আখতার) বাড়ির কাজ করলো না বলে কি আমি কখনও জাভেদের জামা ইস্তিরি করি না? করি। কেন করবো না? ও রকম হিসাব করে কোনও সম্পর্ক চলে না। ও সব নারীবাদের ভুল ব্যাখ্যা মাত্র।’
তার মতে, নারীবাদ হল সম্মান নিয়ে এগিয়ে চলা। নিজের মতো করে কাজ করতে পারা, বাঁচতে পারা।
কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি যে সময়ে কাজ শুরু করেছিলাম, তখন কেউ ভাবতেই পারতেন না এত বছর পরেও আমার অভিনয় করার সুযোগ থাকবে। বেশি বয়সি নারীদের জন্য চরিত্র তৈরি হবে। এখন হয়। সমাজ বদলেছে। মেয়েদের অবস্থানও ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। তবে আরও অনেকটা পথ চলতে হবে।’
শাবানার মতে, ভালো থাকার জন্য স্বাস্থ্যের যত্ন যেমন প্রয়োজন, সম্পর্ক-সংসার সবটা সুন্দর রাখতে পারাও জরুরি। আর তার জন্য রেষারেষি কাটিয়ে ভালবাসতে জানা দরকার।
সম্পর্ক ও সংসার সুন্দর থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন শাবানা। তবে এর কোনও নিয়ম সে অর্থে নেই। তিনি বলেন, ‘কার বিয়ে বা সংসার কোন টোটকায় ভাল থাকবে, সেটা সে-ই সবচেয়ে ভাল বুঝবে। বই মেনে এ সব হয় না। তাই আবার পুঁথিগত বিদ্যা নারীবাদ নিয়ে না ফলানোই শ্রেয়। নারীবাদ একটি স্বাভাবিক, সাধারণ কথা বলে। তা হল সাম্যের কথা। সম্মানের কথা। কী করলে নিজের সম্মান রক্ষা হচ্ছে, বুঝতে হবে।’
এমনকি তার সঙ্গে সংসার-সম্পর্ক-ভালবাসায় জটিলতা সৃষ্টি করার কোনওই যুক্তি নেই বলে মনে করেন তিনি।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সব মেয়ে রান্না করতে পারবেন, এমন কোনও হিসাব নেই। আবার আমি রান্না পারি না মানে আমার সংসারে শান্তি নেই, তা-ও নয়। কারণ হিসাব ও রকম হয় না।’
টানা ৫০ বছর ধরে কাজ করে চলেছেন তিনি। ১৯৭৪-এ চারদিকে হইহই ফেলে দেওয়া ‘অঙ্কুর’ সিনেমার সেই সময় থেকে এ কাল, নানা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে।