সদ্যপ্রয়াত চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের নামে ঋণখেলাপি হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।
মঙ্গলবার (১৬ মে) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফারুকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ কথা বলেন তিনি।
খোরসেদ আলম খসরু বলেন, “একটি পক্ষ ছড়াচ্ছে তিনি (ফারুক) ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি, অথচ এটি একটি প্রোপাগান্ডা। তিনি এক কোটি টাকার মতো যে ঋণ নিয়েছেন তার বদলে ব্যাংকে যে সম্পত্তি মর্টগেজ রেখেছেন তার পরিমাণ অনেক বেশি। মর্টগেজ সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ তো শোধ হবে, তারপরও সেখানে যে টাকা থাকবে সেটা থেকে পরিবার পাবে।”
এ প্রযোজক আরও বলেন, “চিত্রনায়ক ফারুক শুধু অভিনেতা হিসেবেই সফল ছিলেন না, নেতা হিসেবেও সফল ছিলেন। তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের অভিভাবক। তিনি তার এলাকার মানুষকেও অনেক ভালোবাসতেন।”
দুই বছর ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফারুক। সোমবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়।
ফারুকের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জে। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নাম আকবর হোসেন পাঠান হলেও তিনি সবার কাছে ফারুক নামে পরিচিত। বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতির পাশাপাশি নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ফারুকের। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমণি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাইসহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৭৫ সালে লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
