• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘লালনকন্যা’ ফরিদা পারভীনের জন্মদিন আজ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ০৪:২১ পিএম
‘লালনকন্যা’ ফরিদা পারভীনের জন্মদিন আজ

‘লালনকন্যা’-খ্যাত প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন। নজরুলগীতি দিয়ে শুরু করলেও ১৯৭৩ সালের দিকে তিনি দেশাত্মবোধক গান গেয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মূলত পল্লীগীতির শিল্পী হলেও লালনসংগীতের জন্য তিনি দারুণ জনপ্রিয়। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীতের জন্য নির্বাচিত হন।

৩১ ডিসেম্বর নন্দিত এই কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিন। ১৯৫৪ সালে এই দিনে ফরিদা পারভীনের জন্ম নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে। জন্ম নাটোরে হলেও তিনি বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। তবে প্রাতিষ্ঠানিক স্কুলজীবন কেটেছে বিভিন্ন শহরে। স্কুল জীবনের সূচনা হয়েছিল মাগুরায়। তিনি কুষ্টিয়া গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল, কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় এবং মেহেরপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলে অধ্যয়ন করেন।

কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৭৬-৭৯ সালে অনার্স পাস করেন।

মাগুরায় ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে ফরিদা পারভীনের গানের হাতেখড়ি। পরবর্তীতে তিনি কুষ্টিয়ার তখনকার গানের ওস্তাদ রবীন্দ্রনাথ রায়, মোতালেব বিশ্বাস এবং ওসমান গণির কাছে ক্ল্যাসিক্যাল শেখেন। প্রায় ছয়-সাত বছর তানপুরার সঙ্গে ক্ল্যাসিক্যাল চর্চা করার পর তিনি নজরুলসংগীত শিখতে শুরু করেন।

তার নজরুলসংগীতের প্রথম গুরু হচ্ছেন কুষ্টিয়ার ওস্তাদ আবদুল কাদের। এরপর তিনি মেহেরপুরে মীর মোজাফফর আলীর কাছেও নজরুলসংগীত শেখেন। স্বরলিপি দিয়ে নজরুলের গান হারমোনিয়ামে ও কণ্ঠে তোলার কাজটি তিনি ওস্তাদ মীর মোজাফফর আলীর কাছেই প্রথম শেখেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে লালন সাঁইজির গানের সঙ্গে ফরিদার সংযোগ ঘটে। তখন তিনি কুষ্টিয়াতে থাকতেন। সেখানে তাদের পারিবারিক বন্ধু ছিলেন গুরু মোকছেদ আলী সাঁই। ১৯৭৩ সালে ফরিদা তার কাছেই ‘সত্য বল সুপথে চল’ গান শিক্ষার মাধ্যমে লালন সাঁইজির গানের তালিম নেন।

পরে মোকছেদ আলী সাঁইয়ের মৃত্যুর পর খোদা বক্স সাঁই, ব্রজেন দাস, বেহাল সাঁই, ইয়াছিন সাঁই ও করিম সাঁইয়ের কাছে লালন সঙ্গীতের শিক্ষা গ্রহণ করেন। ফরিদা পারভীনের কর্মজীবন সঙ্গীতময়। শুধু লালনের গান নয়, তিনি একাধারে গেয়েছেন আধুনিক এবং দেশাত্মবোধক গান। ফরিদা পারভীনের গাওয়া আধুনিক, দেশাত্মবোধক কিংবা লালন সাঁইয়ের গান সমানভাবেই জনপ্রিয়।

তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে—‘এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা-সুরমা নদীর তটে’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে প্রেমের কী সাধ আছে বলো’, ‘খাঁচার ভিতর’, ‘বাড়ির কাছে আরশি নগর’ ইত্যাদি।

তিনি ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচারাল প্রাইজ ২০০৮ এ সেরা সঙ্গীতের জন্য পুরস্কৃত হন। এছাড়া ১৯৮৭ সালে একুশে পদক এবং ছায়াছবির গানে সেরা কণ্ঠ দানকারী হিসাবে ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া উপমহাদেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের নামাঙ্কিত ‘ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক’সহ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা।

 

Link copied!