ঢাকাই সিনেমার ‘মাস্টার মেকার’ খ্যাত নির্মাতা মালেক আফসারী বলেছেন, ‘গেলবার নিপুণকে সাপোর্ট করেছিলাম। তখন ভেবেছিলাম জায়েদ খানকে কোণঠাসা করতে পারলেই চলচ্চিত্রের বিরাট উন্নয়ন হবে। কিন্তু তা কিছুই হয়নি। হয়েছে বিদেশি সিনেমা আমদানি। ১০ লাখ টাকা ১৮ সমিতি ভাগ করে নিয়েছে। নিপুণ আপনি এই দীর্ঘ সময়ে কিছু করতে পারেননি। সবচেয়ে বড় কষ্টের, আপনার কাছের মানুষই দূরে সরে গেছে। সবাই এখন ডিপজল-মিশার প্যানেলে। ২ বছর আগে ডি এ তায়েব নিপুণকে সাপোর্ট করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এখন বলে না। কারণ, এই ২ বছরে নিপুণ কিছুই করতে পারেনি। নিপুণ নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন, উত্তর পেয়ে যাবেন।’
পরিচালক বলেন, গত ২ বছরে শিল্পী সমিতি কী করেছে? এটা নিয়ে বড় একটি প্রশ্ন। গতবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনকেও হার মানিয়েছিল। নিপুণ আপনি ২ বছরে কী করলেন? আপনি তো আপনার সভাপতিকেই ধরে রাখতে পারলেন না। এখন আপনি সভাপতি পাচ্ছেন না। আর আপনার সভাপতি এসব কী বলে? এ কথাগুলো কি আপনার বিরুদ্ধে যাচ্ছে না। নিশ্চয়ই যাচ্ছে।
শিল্পী সমিতির ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে ‘ঠেকাও মাস্তান’র মালেক আফসারী বলেন, আপনারা গত দুই বছরে একটা সফল সাধারণ মিটিং করতে পারেননি। কাউকে এক করতে পারেননি। খালি দ্বন্দ্ব আর দ্বন্দ্ব। দুই বছর এটিই চলছে। নিপুণ আপনি কথা দিয়েছিলেন ছয়টি সিনেমা করবেন। নানা শাহ দুটি সিনেমা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে কেউ সহযোগিতা করেননি। আমি নিজেও জানি আপনি ছয়টি সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সিনেমাগুলো হয়েছে?
যোগ করে তিনি আরও বলেন, আপনার এক বক্তব্যে বলেছিলেন—একজন প্রযোজক এনে ‘সুজন মাঝি’ নামে একটি সিনেমা বানিয়েছেন। সেটি তো লো বাজেটের সিনেমা ছিল। বর্তমান যুগে যুগে এ ধরনের সিনেমা চলে কি না, সেটা আপনার বোঝা উচিত। আর এ ধরনের সিনেমা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির কী উপকার হবে, সেটি আপনিই ভালো জানেন। আরও দুঃখের কথা, আপনি বলেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এফডিসিতে আনবেন, সেটিও পারেননি। সবচেয়ে বড় কষ্টের নায়িকা শাহনূর, সুচরিতা ম্যাডাম আপনার বিরুদ্ধে বলছেন। কেন এমন হয়েছে জানি না। তবে আপনি কিন্তু সফল হননি এটা কিন্তু বোঝা যায়।
এ সময় ‘হীরা চুনি পান্না’ সিনেমার অভিনেতা ডিপজলের প্রশংসা করে পরিচালক মালেক আফসারী বলেন, টাকা-পয়সা তো অনেকেরই আছে। কয়জন দেয়। ডিপজল সাহেব নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ। এ জন্য তাকে আমি সাপোর্ট করব। শাকিব খান নির্বাচনে না আসায় খুশি হয়েছি। মানুষ হিসেবে ডিপজল সাহেবের জবাব নেই। তিনি এবার নির্বাচন করবেন। আমি তার পক্ষে। তিনি সবার বিপদে সবসময় পাশে থাকেন। বর্তমানে অধিকাংশ শিল্পীর হাতে কাজ নেই। এদের মধ্যে কেউ তার কাছে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসেনি কখনো। সাভারে একটি জেলে বস্তি আছে সেখানকার গরিব মানুষদের বিপদে কিন্তু এই ডিপজল সাহেবই পাশে থাকেন।
সর্বশেষ তিনি বলেন, সমিতি দিয়ে সিনেমার উন্নতি হবে না। সমিতি হচ্ছে সদস্যদের ভালো-মন্দ দেখার জন্য। শিল্পীদের বিপদে পাশে থাকবে। এ ছাড়া কিছুই না। ১৮ সমিতি যদি মিলে একটি সিনেমা উপহার দিতে পারত তাহলে আজ গর্ব নিয়ে বলতে পারতাম। সিনেমা বানাতে হবে সিনেমার মতো। ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকার এইগুলো কি সিনেমা। আজকাল এই টাকায় নাটকই তৈরি হয়।