মাত্র চার বছর বয়সে সংসারের প্রয়োজনে গান গাইতে শুরু করেন তিনি। বাবা শিঙাড়া বিক্রি করতেন, আর তাদের পরিবার থাকত এক কামরার ছোট্ট ভাড়া বাড়িতে। এমনকি একসময় তার মা-বাবা ভেবেছিলেন গর্ভপাত করে তাকে পৃথিবীতে আনবেনই না! অথচ সেই মেয়েটিই আজ কোটি কোটি টাকার মালিক, বলিউডের অন্যতম সুপারহিট গায়িকা! হ্যাঁ, বলছিলাম নেহা কাক্কারের কথা। এ প্রজন্মের জনপ্রিয় গায়িকাদের মধ্যে অন্যতম তিনি।
ঋষিকেশে জন্ম হলেও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তার পরিবার দিল্লিতে চলে আসে। ছোটবেলা থেকেই নেহা স্থানীয় ফাংশন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও স্টেজ শো-তে গান গাইতেন। পারফরম্যান্সের বিনিময়ে পেতেন মাত্র ৫০ টাকা, যা দিয়ে সংসার চলত। নেহা কখনোই প্রথাগতভাবে গান শেখেননি, কিন্তু সুরের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও কঠোর পরিশ্রম তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
নেহা কাক্কর ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এ প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নেন, কিন্তু বেশি দূর এগোতে পারেননি এবং শো থেকে বাদ পড়ে যান। তবে এখানেই তিনি থেমে যাননি। একের পর এক সুযোগ খুঁজতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত বলিউডে জায়গা করে নেন। প্রীতমের সুরে ‘ককটেল’ ছবির গান ‘সেকেন্ড হ্যান্ড জওয়ানি’ ছিল তাঁর জীবনের প্রথম বড় ব্রেকথ্রু। গানটি চার্টবাস্টার হয় এবং নেহা বলিউডের প্লেব্যাক দুনিয়ায় নিজের জায়গা তৈরি করেন।
এরপর একের পর এক হিট গান আসে তাঁর ঝুলিতে। ‘লন্ডন ঠুমকাডা’ (ক্যুইন), ‘সানি সানি’ (ইয়ারিয়াঁ), ‘দিলবর’ (সত্যমেব জয়তে), ‘আঁখ মারে’ (সিম্বা)—এই গানগুলোর মাধ্যমে তিনি বলিউডে নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করেন।
যে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ থেকে একসময় বাদ পড়েছিলেন, পরে সেই একই মঞ্চে বিচারকের আসনে বসেন নেহা। আজ তিনি শুধু একজন সফল গায়িকাই নন, বরং লাখো মানুষের অনুপ্রেরণা।
তাঁর ভাই টনি কাক্কারও একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। এক কামরার ছোট্ট ভাড়া বাড়ি থেকে আজ নেহার বিলাসবহুল বাংলো, অগণিত ফ্যান-ফলোয়ার, আর বলিউডের প্রথম সারির গায়িকাদের তালিকায় নিজের শক্ত অবস্থান- সবই প্রমাণ করে যে কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিভা থাকলে জীবনে অসম্ভব বলে কিছুই নেই।