বলিউড স্টার সাইফ আলী খানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে তাকে আলাদা কক্ষে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, সাইফের অবস্থা আগের তুলনায় বেশ ভালো। তিনি সেরে উঠছেন।
গত বুধবার রাতে বান্দ্রার ১১ তলার ফ্ল্যাটে হামলার শিকার হন সাইফ আলী খান। সাইফের শরীরে ছয়বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। লীলাবতী হাসপাতালে টানা পাঁচ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর সাইফকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) হাসপাতালটির চিকিৎসক নিতিন নারায়ণ ডাঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, সাইফ আলী খান এখন হাঁটতে পারছেন। তাঁর কোনো জটিলতা নেই, শরীরে খুব একটা ব্যথাও নেই।
হাসপাতালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা নিরাজ উত্তমনির ভাষ্যে, ‘সাইফ আলী খানকে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তখন তার শরীর রক্তে ভেজা ছিল। তবু বলব যে তিনি খুবই সৌভাগ্যবান। অল্পের জন্য বেঁচেছেন নায়ক। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে মাত্র দুই মিলিমিটার দূরে ছুরিকাঘাত করেছিল। যদি ছুরি আর দুই মিলিমিটার গভীরে যেত, তাহলে তার অবস্থা গুরুতর হতো।
এখন তিনি স্ট্রেচার ছাড়াই হেঁটে বেড়াতে পারছেন। তিনি সত্যিকারের নায়ক।’ রাতে হাসপাতালে ভর্তির ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ছেলে তৈমুরের হাত ধরে সাইফ সিংহের মতো ঢুকেছিলেন। ছবিতে নায়কগিরি করা এক রকম, কিন্তু ঘরে কেউ আপনার ওপর আক্রমণ করলে সেখান থেকে এভাবে বেরিয়ে আসা মুখের কথা নয়। এই কর্মকর্তা জানান, আগামী এক সপ্তাহ সাইফকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন চিকিৎসকেরা। আপাতত দর্শনার্থীদের তাঁকে দেখতে যেতে বারণ করা হয়েছে।
এদিকে, সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করেছে মুম্বাই পুলিশ। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে ধরা ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বার্তা সংস্থা এএনআই একটি ভিডিও তাদের এক্স হ্যান্ডলে প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে থানায় ঢোকানো হচ্ছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে। মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে আপাতত আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই পুলিশ ধারণা করেছিল, ঘটনার পর সকালের প্রথম লোকাল ট্রেন ধরে ভাসাই ভিরারের দিকে রওনা দেন ওই ব্যক্তি। ভাসাই, নালাসোপারা ও ভিরার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালানো শুরু করে মুম্বাই পুলিশের দল। কয়েক ঘণ্টার চিরুনি তল্লাশি শেষে সিসিটিভিতে মুখ দেখা যাওয়া ওই ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছেন তদন্তকারীরা।
মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, তারা সাইফের পিঠ থেকে বের করা ছুরির অংশটি হাতে পেয়েছে। ওই ছুরির বাকি অংশ কোথায়, তা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সাইফের ওপর হামলার পর কারিনা এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটা দিন ছিল। আমরা এখন পরিস্থিতির সঙ্গে সামলে ওঠার চেষ্টা করছি। ভেবে পাচ্ছি না যে এসব কীভাবে ঘটে গেল। এই কঠিন সময়ে আমি মিডিয়া ও পাপারাজ্জিদের অনুরোধ করছি, কোনো রকম গুজব ছড়াবেন না। আর এমন কোনো কাভারেজ দেবেন না, যা অসত্য। আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আপনারা যেভাবে চিন্তিত, আমাদের জন্য তা অনেক বড় বিষয়। আমি সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাদের যে গণ্ডি আছে, তাকে সম্মান করুন, আমাদের একটু স্পেস দিন।’