বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিল এফডিসিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনের আপিল বোর্ড।
এবারের নির্বাচনে কেউ সরে দাঁড়াচ্ছেন, আবার কেউ আগের প্যানেল থেকে সরে অন্য প্যানেল গড়ছেন। তাদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন ডিপজল আগে সভাপতি পদে নির্বাচন করার কথা বলেছিলেন। তবে এ সিদ্ধান্ত তিনি পরিবর্তন করেছেন।
এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জোট গঠন করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় দুই খল-অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও মিশা সওদাগর। একই প্যানেলে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে থাকছেন চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী।
গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে ডিপজল বলেন, “মিশা সওদাগর পরপর দুই বার সভাপতি ছিলেন। ওই কমিটিতে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিলাম। এবার সভাপতি নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। মিশা নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি তাকে স্বাগত জানাই। নিজেই তাকে সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য বলি। আমাদের মধ্যে সবসময়ই একটা সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে কে সভাপতি, আর কে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করবে, এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো মতভেদ নেই। একজন করলেই হলো। এটা আমরা নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করেছি। আমি মনে করি, মিশা এ পদে যোগ্য। এর আগে আমি সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তাই এই পদে আবারও নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
ডিপজল বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য, শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করা। পদে না থেকেও মনমানসিকতা থাকলে শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো যায়। তবে সমিতির মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে, তা সবার উপকার হয়। যতদিন বেঁচে আছি, সবসময়ই শিল্পীদের পাশে আছি এবং থাকব। সমিতিকে আমার পরিবার মনে করি। এর প্রত্যেক সদস্য আমার পরিবারের অংশ। তাদের সমস্যা সমাধানে যে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন, তা আমাদের প্যানেল ভালোভাবে করতে পারবে বলে আমি মনে করি।”
ডিপজল আরও বলেন, “আমাদের প্যানেলে যারা থাকছেন, তারা প্রত্যেকেই যোগ্যতা সম্পন্ন ও কাজের লোক। শিল্পীরা উপকৃত হবেন। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করব। এতে চমক থাকবে। আমাদের লক্ষ্য, সমিতিকে শিল্পীদের সুখে-দুঃখে এবং তাদের স্বার্থে কাজে লাগানো। এছাড়া কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে সিনেমার সংখ্যা বাড়িয়ে বেকার শিল্পীদের ব্যস্ত করে তোলা যায়, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেব। এফডিসি যাতে আবার জমজমাট হয়ে উঠে, চাঙা হয়ে ওঠে সেই পদক্ষেপ নেব। যারা সিনেমা বানায় কিংবা সিনেমা বানানো বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের সিনেমা বানাতে উৎসাহিত করব। আমি নিজে একের পর এক সিনেমা বানাচ্ছি। আরও পাঁচজন যদি সিনেমা নির্মাণ শুরু করে, তাহলে ইন্ডাস্ট্রি চাঙা হয়ে উঠবে। শিল্পীরাও কাজ পাবে। আমাদের লক্ষ্য চলচ্চিত্রে শিল্পী সমিতিকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা। শিল্পীদের মাঝে ঐক্য গড়ে তোলা। আমরা বড় বড় কথার চেয়ে, কাজে বিশ্বাসী। কাজ দিয়ে শিল্পীদের কল্যাণ করব। সব ভেদাভেদ দূর করে, সবার মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করব।”
এদিকে আসন্ন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে থাকছেন না জায়েদ খান। গত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের সঙ্গে জটিলতা তৈরি হয়। দুইজনই মামলা করেন এবং পরবর্তী সময়ে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে একের পর এক আইনি জটিলতা তৈরি হয়।
এ বিষয়ে জায়েদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি নির্বাচন নিয়ে এর আগে অনেক সময় দিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। পরিবারকে সময় দিতে পারিনি। এর মধ্যে মা-বাবাকে হারিয়েছি। এখন আমার অভিভাবক বোন। তিনিসহ পরিবারের অনেকেই চাইছেন না নির্বাচনে যাই। পরে আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে।”
আসন্ন নির্বাচনের প্রধান কমিশনার ও আপিল বিভাগ চূড়ান্ত হয়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রধান কমিশনার হিসেবে থাকছেন খোরশেদ আলম খসরু। তিন সদস্যের এই বোর্ডে অন্যরা হলেন এ জে রানা ও মোহাম্মদ নিশাদ।
আপিল বিভাগে প্রধান হিসেবে রয়েছেন শামসুল আলম। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মজনু ও নির্মাতা সেলিম আজম।