বরেণ্য অভিনেত্রী দিলারা জামান ৮১ শেষ করে ৮২ বছরে পা রাখলেন। তবে দুঃখের সংবাদ বিশেষ এই দিনে ভালো নেই জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। হঠাৎ অসুন্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি।
সংবাদ প্রকাশকে তার বড় মেয়ে তানিরা বলেন, ‘ দু’তিন দিন হলো মায়ের শরীরটা ভালো নেই। সকালে একবার বমিও করেছে। ডায়াবেটিস বেড়েছে, এখন ঘুমাচ্ছে। সবাই দোয়া করবেন।’
মায়ের জন্মদিন নিয়ে তানিরা বলেন, ‘ গতকাল থেকে জন্মদিন পালনের প্রস্তুতি ছিল। অনেককে দাওয়াত করেছিলাম। কিন্ত হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সবাইকে না করে দিয়েছি। সবার মন খারাপ হয়ে গেছে। আল্লাহ আমার মাকে যেন সুস্থ করে তোলেন এই দোয়া করবেন।’
বরেণ্য অভিনেত্রী দিলারা জামানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার অর্জনের শেষ নেই। একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন গুণী এ অভিনেত্রী।
১৯৪৩ সালের ১৯ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ৮১ বছর পূর্ণ করে ৮২ তে পা রাখলেন তিনি। দীর্ঘদিন দিলারা জামান মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। এখনও টিভি নাটকে ও সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করছেন। তবে তিনি যখন অভিনয় শুরু করেন তখন বাঙালি মধ্যবিত্তের সমাজ ছিল অত্যন্ত রক্ষণশীল। প্রতিকূলতার সমস্ত বাধা পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছেন তিনি।
শিক্ষাজীবনে দিলারা জামান বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পড়াশুনার পাঠ শেষ করে অভিনয়ের পাশাপাশি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। ১৯৯২ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। মুরাদ পারভেজ পরিচালিত ‘চন্দ্রগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৫৭ সালে স্কুলে প্রথম নাটক করেন মঞ্চে। শরৎচন্দ্রের ‘মামলার ফল’। ১৯৬৩ সালে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তখন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ইউনিয়নের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে একাঙ্কিকায় অভিনয় করেন। একই বছরে আলাউদ্দীন আল আজাদ রচিত ডাকসু’র নাটক ‘মায়াবি প্রহর’-এ অভিনয় করেন। ১৯৬৬ সালে প্রথম নাজমুল আলমের রচনায় ও আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় রেডিওতে প্রথম নাটক করেন।
টেলিভিশনে দিলারা জামান প্রথম ১৯৬৭ সালে খান জয়নুলের লেখা ‘পিনিস’ নাটকে অভিয়ন করেন। পরিচালক ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় প্রথম ১৯৮৪ সালে ‘দিনের শেষে’ নাটকে অভিনয় করেন। এরপর হুমায়ূন আহমেদের ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’ নাটকেও অভিনয় করেন।
দিলারা জামান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে, ‘আগুনের পরশমনি’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘মনপুরা’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘অপেক্ষা’, ‘আলতাবানু’, ‘গুনিন’, ‘পোস্টমাস্টার ৭১’। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘দায়মুক্তি’, ‘শেখ রাসেল’, বায়েপিক-মুজিব।
