অবশেষে সমালোচনা মুখে নামিয়ে ফেলা হলো কোকা-কোলা বাংলাদেশের নতুন বিজ্ঞাপনচিত্রটি। ১১ জুন সকালে এটি নামিয়ে ফেলা হলো প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে। যদিও এ বিষয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কোনও ঘোষণা বা বক্তব্য দেয়নি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত।
তবে বিজ্ঞাপনটির ডাবিং করা বিকৃত ভার্সনটি এখনও তুমুল চলছে অসংখ্য ফেসবুক গ্রুপে, পেজে ও ইউটিউব চ্যানেলে।
এদিকে বিজ্ঞাপনটির নির্মাতা ও প্রধান অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন গতকাল (১০ জুন) রাতেই আত্মপক্ষ সমর্থনে দুঃখ প্রকাশ করেন। স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘এই বিজ্ঞাপনে আমি কোথাও ইসরায়েলের পক্ষ নিইনি এবং কখনোই আমি ইসরায়েলের পক্ষে নই।’
এরপরই বিজ্ঞাপনের অন্য মডেল শিমুল শর্মাও ক্ষমা চাইলেন। মেনে নিলেন দায়!
কী দারুণ বললেন তরুণ অভিনেতা, ‘পরিচয় দেবার মতো অভিনেতা এখনও হয়ে উঠতে পারিনি, কারণ একজন অভিনেতা হবার জন্য যে অধ্যবসায় এবং দূরদর্শিতা দরকার সেটা এখনও আমার হয়ে ওঠেনি, আমি চেষ্টা করছি মাত্র। তাই হয়তো না বুঝে করা আমার কাজ আজ আমার দর্শক, তথা আমার পরিবার ও দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। আমি ভবিষ্যতে কোনও কাজে অভিনয় করতে গেলে অবশ্যই আমাদের দেশের মূল্যবোধ, মানবাধিকার, মানুষের মনোভাবকে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে বিবেচনা করে তারপর কাজ করবো। আমি মাত্র আমার জীবনের পথচলা শুরু করেছি, আমার এই পথচলায় ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাকে ভবিষ্যতে একজন বিবেকবান শিল্পী হয়ে ওঠার জন্য শুভ কামনায় রাখবেন।’
সোমবার (১০ জুন) মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার (১১ জুন) সকাল পর্যন্ত, দুই মডেলের ক্ষমা চাওয়া এবং বিজ্ঞাপনটি তুলে নেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে অল্প সময়ের ব্যবধানে ধারাবাহিকভাবে। মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে ছড়ানো গুজবের বিপরীতে এমন আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরাজয়, সত্যিই সহসা মেলেনি বাংলাদেশে।
বাজারে প্রচলিত রয়েছে, কোকা-কোলা ইসরায়েলের একটি পণ্য। ফিলিস্তিনে হামলা চালানোর দায়ে দেশটির এই পণ্য বয়কটের দাবি তুলেছে অনেকে। মূলত সেই গুজব কাটিয়ে তোলার লক্ষ্যে কোকা-কোলা বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন শরাফ আহমেদ জীবনকে দিয়ে। যাতে বোঝানোর চেষ্টা ছিলো, কোকা-কোলা ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান নয়। এটার ফ্যাক্টরি খোদ ফিলিস্তিনেও রয়েছে। আর বাংলাদেশের কোকা-কোলা দেশেই তৈরি হয়।
বিজ্ঞাপনের শেষ সংলাপটি হলো এমন, ‘একটা চুমুক দেন-তারপর সার্চ দেন’। অর্থাৎ গুজবে কান না দিয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখুন কোকা-কোলা কোন দেশের প্রতিষ্ঠান।
এতে তো কাজ হলোই না। বরং পুরনো বয়কটের দাবি যেন নতুন করে প্রাণ পেলো! যদিও এই দাবি আসলে কারা করছে, ফেসবুকের বাইরে সেটির কোনও প্রাতিষ্ঠানিক বা সাংগঠনিক রূপ দেখা যায়নি এখনও।