বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ও মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার একাডেমি এওয়ার্ড বা অস্কার। বছরজুড়ে বিশ্বের কোটি কোটি চলচ্চিত্র অনুরাগী প্রতীক্ষায় থাকে পুরস্কার প্রদানের দিনটির জন্য। কার হাতে উঠবে সেরার পুরস্কার, কে জিতবেন সোনালি সেই ট্রফি!
অস্কার নিয়ে তুমুল উৎসাহ উদ্দীপনা থাকলেও অনেকেই এই পুরস্কারের পেছনের বেশকিছু ইতিহাস হয়তো জানেন না। অস্কারের পুরো ট্রফিটিই কি সোনা দিয়ে বানানো? না, ব্রোঞ্জের তৈরি এই ট্রফিটিতে ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপ থাকে। এটি ১৩.৫ ইঞ্চি লম্বা এবং এর ওজন ৮.৫ পাউন্ড। অবাক করার মতো বিষয় হলো এই ট্রফি তৈরি করতে ব্যবহৃত উপাদান ব্যবহৃত হয় নাসার নভোযান নির্মাণে। ওয়ালেটহাবের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রফিটি তৈরি করতে মোট খরচ হয় ৪০০ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৪ হাজার টাকা।
কিন্তু ট্রফি তৈরিতে খরচ এত কম হওয়া সত্ত্বেও কেন নিলামে উঠলে এর দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়? মূলত মর্যাদার কারণেই অস্কার নিলামে উঠলে বিক্রি হয় কয়েক লাখ বা কোটি টাকায়। যেমন- ১৯৪২ সালে সেরা শিল্প নির্দেশনা বিভাগে পাওয়া জোসেফ সি রাইটের অস্কার ট্রফিটি বিক্রি হয়েছিল ৭৯ হাজার ২০০ মার্কিন ডলারে; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৭৪ লাখ টাকা।
তবে, মজার বিষয় হলো একাডেমি চাইলে মাত্র ১০ ডলারের বিনিময়ে ট্রফিটি মালিকের কাছ থেকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। আর বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কেউ যদি এখন তার অস্কার বিক্রি করতে চান, তাহলে তাকে প্রথমে মাত্র ১ ডলারের বিনিময়ে ট্রফিটি একাডেমিকে ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দিতে হবে। এরপরেই তিনি তা নিলামে বিক্রির সুযোগ পাবেন।
বর্তমানে এই চুক্তিতে একটি বিশেষ শর্ত রয়েছে, ট্রফির মালিক ট্রফিটি চাইলেই বিক্রি করতে পারবে না। এজন্য একাডেমির সঙ্গে ট্রফির মালিকের চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে একাডেমি সরাসরি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ট্রফি সংক্রান্ত অপরাধ গুরুতর হলে হাজতবাস পর্যন্ত হতে পারে!
এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউড অ্যান্ড হাইল্যান্ড সেন্টারের ডলবি থিয়েটারে ১০ মার্চ রাতে (বাংলাদেশ সময় ১১ মার্চ, ভোর ৫টা) শুরু হয় পুরস্কার বিতরণ। চলচ্চিত্রে ২০২৩ সালের সেরা কাজগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবারের আসরে। ৯৬তম অস্কারে ২৩টি শাখায় পুরস্কার দিয়েছে অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। গত বছরের মতো এবারও জাঁকজমকপূর্ণ অস্কার সঞ্চালনা করেছেন আমেরিকান টিভি তারকা জিমি কিমেল। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই দায়িত্বে দেখা গেছে তাকে। ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির মালিকানাধীন এবিসি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশসহ ২০০টিরও বেশি দেশে সরাসরি সম্প্রচার করেছে অনুষ্ঠানটি।