জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগম। যিনি ফোক সম্রাজ্ঞী হিসেবেও পরিচিত। মাটি আর শেকড়ের গানে তিনি এ দেশের মানুষের সঙ্গে মিশে রয়েছেন। এখন শুধু গ্রাম-গঞ্জ কিংবা শহর নয়, তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে গেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। গান গেয়ে গিনেস বুকে নাম তোলা এই গায়িকার জন্মদিন রোববার, ৫ মে। তবে জন্মদিন নিয়ে আহামরি কোনো আয়োজন নেই এই শিল্পীর।
বর্তমানে আমেরিকায়া রয়েছেন মমতাজ। সেখান থেকে ফেসবুকে জন্মদিন ঘিরে কিছু ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন-
“ধন্যবাদ তানভীর, নীলিমা শশী, রিজিয়া পারভীন, হেলাল খান কে হঠাৎ আয়োজনের জন্য। জন্মদিন টা এতো পুরনো হয়ে গেছে যে ফেইসবুক না থাকলে হয়তো এতোদিনে এইদিন টা ভুলেই যেতাম। তবে মন সুন্দর রাখবেন তাহলে তেষট্টি বৎসর বয়স হলেও আমার মতো সুন্দর এবং সুস্থ থাকবেন ইনশাল্লাহ।”
মা উজালা বেগমের মৃত্যুর পর জন্মদিন নিয়ে মমতাজের তেমন কোনো আবেগ নেই। তার জীবনে তার মায়ের যে ভূমিকা ছিল তা অপরিসীম। তাই মাকে হারানোর পর তার জীবনে যে শূন্যতা তা আর কোনোদিনই পূরণ হবে না। এমনিতেই সবসময় মমতাজ তার মায়ের শূন্যতাকে অনুভব করেন। জন্মদিন এলে যেন তা আরও অনেক বেশি বেড়ে যায়।
জন্মদিন প্রসঙ্গে মমতাজের ভাষ্য, ‘সত্যি বলতে জন্মদিন এলে বেশ ভালো লাগে, সবাই ফোন করে, নানাভাবে তাদের ভালোলাগা প্রকাশ করে। সেটা হোক মুঠোফোনে, হোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিংবা সরাসরি। সন্তানদের নিয়ে সময়টাকে উপভোগ করার চেষ্টা করি। তবে আমার মা চলে যাওয়ার পর আমার আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। ’
মমতাজ আরও বলেন, ‘আমার যত সুখ, যত আনন্দ-সবই আসলে আমার মাকে ঘিরে ছিল। মা নেই, ভাবলেই ভীষণ কষ্ট হয়। সবকিছু আমার কেমন যেন হয়ে যায়। আমার মায়ের জন্য বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন- যেন আল্লাহ তাদের বেহেস্ত নসিব করেন। আর আমার পরিবারের জন্যও দোয়া করবেন।’
১৯৭৪ সালের ৫ মে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরে জন্মগ্রহণ করেন মমতাজ বেগম। তার বাবা মধু বয়াতিও গান করতেন। তার কাছ থেকেই গানে হাতেখড়ি। পরে মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান এবং শেষে আবদুর রশীদ সরকারের কাছে গান শেখেন। সেই থেকে আজ অবধি গান গেয়ে যাচ্ছেন তিনি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৭০০ শতাধিক গানের রেকর্ড করেছেন। তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন মমতাজ। রাজনীতি ও সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখলেও গান ছাড়া নিজেকে কল্পনা করতে পারেন না অগণিত জনপ্রিয় গানের এই গায়িকা।