চিত্রনায়িকা ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিপুণের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্তে যাচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। তার বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি প্রদান করায় জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন মিশা-ডিপজল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিটি।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সমিতির ষষ্ঠ সভায় এ বিষয় উত্থাপিত হলে নিপুণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নিপুণ আপা একজন সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এটা করার সুযোগ নেই। তিনি অনৈতিকভাবে তার কাছে থাকা প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি সমিতিকে বিব্রত করেছেন, যা জালিয়াতির পর্যায়ে পড়ে। এ কারণে আজকের সভায় সকলেই ঐক্যমত হয়েছি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।’
জয় বলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যে তাকে নোটিশ দেওয়া হবে। আমরা তার উত্তরের অপেক্ষায় থাকব। উত্তর সন্তোষজনক না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল ফজল পলাশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নিপুণ আক্তার ক্ষমতায় না থেকেও অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করেছেন যা পিনাল কোড ক্রিমিনাল আইনের ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নিপুণের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চলতি মাসের ১৬ জুলাই সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক বিবৃতি প্রদান করেন নিপুণ আক্তার। সেখানে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক সাবেক বলেই উল্লেখ করেন তিনি। ১৭ জুলাই নিজের ফেসবুক ওয়ালে সেটা পোস্টও দেন। আজ ৩১ জুলাই বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি তার ওয়ালে দেখা যাচ্ছিল।
কোটা আন্দোলন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে সেসময় তোপের মুখে পড়েন নিপুণ। মূলত তিন কারণে সমালোচনায় জড়ান তিনি। প্রথমত, নিপুণ তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করে। যেখানে নিজেকে ‘সাবেক’ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কোনও পদবিতে নেই। তাহলে তিনি কীভাবে সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহারের এখতিয়ার রাখেন—অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দ্বিতীয়ত, এটি হুবহু কপি করা হয়েছে টেলিভিশনের অভিনয়শিল্পী সংঘের বিবৃতি। সহিংসতাকে এড়িয়ে দেওয়া সে বিবৃতি নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। তৃতীয়ত, নিপুণের বিবৃতিতেও একইভাবে সহিংসতা ও নিহত হওয়ার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।