গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর থেকে গাজায় বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে ইসরাইলের সমালোচনা যেমন বেড়েছে, তেমনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহায়নুভূতি প্রকাশ করছেন অনেকেই। এবার তাদের পাশে দাঁড়ালেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অব্যাহত বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হলিউড এই অভিনেত্রী। গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে, অ্যাঞ্জেলিনার এমন মন্তব্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন তার অনুসারীরা।
সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি লেখেন, অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচার এই হামলার পেছনে কোন বৈধতা ও ন্যায্যতা থাকতে পারে না। সেখানে খাবার, পানি, ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা গেছে। মৌলিক অধিকার বলে কিছু নেই। আশ্রয় নেওয়ার জন্য সীমান্ত পার হবে তাও সম্ভব হচ্ছে না। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক শিশু এখন বাবা-মা হারা হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া পোস্টে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান তিনি।
গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ইসরায়েলের মূলভূখণ্ডে হামলার প্রসঙ্গে অভিনেত্রী লেখেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যা ঘটেছে তা সন্ত্রাসী হামলা। কিন্তু এর জেরে অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক জনগণের ওপর বোমাবর্ষণ ন্যায্যতা পায় না।
গাজাবাসীদের খাবার, পানি, ওষুধ নেই। যুদ্ধ আরও তীব্রতর হলেও সেখান থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সেখানে বাসিন্দাদের মৌলিক অধিকারও নেই। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তাদের সীমান্ত পার হতে হবে, সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আরও লেখেন, ‘গাজায় বহু শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক শিশু এখন বাবা-মা হারা হয়ে গেছে। অবিলম্বে আটককৃত ও জিম্মিদের মুক্তি দেয়া প্রয়োজন। স্বজন হারাদের অকল্পনীয় যন্ত্রণা ও তাদের পরিবারের জন্য আমি প্রার্থনা করছি।’
তবে, হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এমন মন্তব্যে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার ভক্ত-অনুসারীরা। নিউজ উইকের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইনস্টাগ্রামে অ্যাঞ্জেলিনার মন্তব্যে তার কিছু অনুসারী প্রশংসা করলেও বেশিরভাগই তার বিরোধিতা করেছে।
মার্সেলিনা মারিয়া নামের এক অনুসারী লিখেছেন, আপনি কিছু না বলে এত কিছু বলতে পারলেন কিভাবে? আপনি কি নিরপক্ষ হওয়ার চেস্টা করছেন?
জীবনশিরা নামের অন্য এক অনুসারী লিখেছেন, আপনি যদি অন্যায়ের পরিস্থিতে নিরপক্ষ হন, তবে আপনি নিপীড়কের পক্ষ বেছে নিয়েছেন।
আফুহানা নামের অন্য এক অনুসারী লিখেছেন, এটাকে গণহত্যা বলুন, আপনার এমন বক্তব্যে নিরাশ হয়েছি। আপনার থেকে এমন কিছু আশা করিনি। আশ্চার্যজনক যে তিন সপ্তাহ পরও আপনি এখনও ফিলিস্তিনের আগে ইসরায়েলকে বেছে নিচ্ছেন!
জোলিই একমাত্র তারকা নন যার ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয় নাগরিককে সমর্থন করার প্রচেষ্টা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
এর আগে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনির চলমান সংঘাত প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন পপতারকা ও অভিনেত্রী সেলেনা গোমেজ। সেসময় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সহিংসতার নিন্দা জানান তিনি।
এদিকে চলমান এই সংকটে ইতিমধ্যে বিশ্ব তারকারা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াকিন ফিনিক্স, কেট ব্লানচেট, জিজি হাদিদ, বেলা হাদিদ, দুয়া লিপা ও জায়েন মালিকের মতো তারকা ফিলিস্তিনের সমর্থনে শান্তি ও ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।